আজ ১১ আগস্ট ২০২০, ভারতবর্ষের স্বাধীনতা সংগ্রামের কনিষ্ঠতম শহিদ ক্ষুদিরাম বসুর ১১২তম মৃত্যুদিবস। ১৯০৮ সালের ১১ অগাস্ট ফাঁসি দেওয়া হয় ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের কনিষ্ঠতম বিপ্লবীকে।
ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে বিপ্লবী ক্ষুদিরাম বসু একটি ইতিহাস । তিনি ছিলেন এই আন্দোলনের সর্ব কনিষ্ঠ বিপ্লবী । দেশ থেকে ব্রিটিশ হঠাও আন্দোলনের এক পর্যায়ে তিনি হাসি মুখে ফাঁসীর মঞ্চে গিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন । তাঁর এই আত্মত্যাগ ভারতবর্ষকে স্বাধীনতা লাভে অনেকদূর এগিয়ে নিয়েছিল। তিনি হয়ে উঠেছিলেন কিংবদন্তীর মহা নায়ক ।
অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এই তরুণ বিপ্লবীকে নিয়ে ব্রিটিশ সরকার অনেকটা বিপাকেই পড়ে যায়। যত দিন যাচ্ছিল, সারা ভারতে ক্ষুদিরামকে নিয়ে এক ধরনের উন্মাদনা তৈরি হচ্ছিল।
ব্রিটিশের মাথা থেকে সেই বোঝা নেমে যায় সেদিন, যেদিন মামলায় ভারতীয় দণ্ডবিধি আইনের ৩০২ ধারা মোতাবেক ক্ষুদিরামের মৃত্যুদণ্ডের রায় হয়। ফাঁসির সাজা ঘোষণা শুনে শুধু হেসেছিলেন। ফাঁসিকাঠে দাঁড়িয়ে যখন কালো মুখোশ পরানো হল, তখনও শেষবারের মতো দেখাগিয়েছিল সেই হাসি। তাঁর ফাঁসির পর ব্রিটিশ পত্রিকা ‘এম্পায়ার’এ প্রকাশিত হয়, ‘…নিথর মৃতদেহ। কিন্তু, মুখের হাসি সেই হাসি।’ এভাবেই দেশের জন্য প্রাণ দিয়েছিলেন বিপ্লবী ক্ষুদিরাম বসু। এই অগ্নিযুবকই হলেন ভারতবর্ষের স্বাধীনতা সংগ্রামের কনিষ্ঠতম শহিদ। ক্ষুদিরামকে তারা ফাঁসিতে ঝুলিয়ে সেই রায় কার্যকর করেছিল ১৯০৮ সালের ১১ আগস্ট ।
বিপ্লবী ক্ষুদিরাম বসু ৩ ডিসেম্বর ১৮৮৯ পশ্চিম বাংলার মেদিনীপুর জেলা শহরে কাছাকাছি হাবিবপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন । তাঁর পিতা ত্রৈলকানাথ বসু ছিল নাদাজল প্রদেশের শহরে আয় এজেন্ট। তার মা লক্ষীপ্রিয় দেবী। তিন কন্যার পর তিনি তার মায়ের চতুর্থ সন্তান।তার দুই পুত্র আগেই মৃত্যুবরণ করেন।অপর পূত্রের মৃত্যুর আশংকায় তিনি তখনকার সমাজের নিয়ম অনুযায়ী তার পুত্রকে তার বড় বোনের কাছে তিন মুঠি খুদের (শস্যের খুদ) বিনিময়ে বিক্রি করে দেন। খুদের বিনিময়ে ক্রয়কৃত শিশুটির নাম পরবর্তীতে ক্ষুদিরাম রাখা হয়।
১১ আগস্ট ১৯০৮ ফাঁসির মাধ্যমে সমাপ্ত হয় এই বিপ্লবীর একটি জীবন একটি ইতিহাসের।
আজকের এই দিনে এই মহান বিপ্লবীর প্রতি অজস্র শ্রদ্ধাঞ্জলী ।