মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৩টার দিকে হঠাৎ করে আগুনের সূত্রপাত হলে মুহূর্তের মধ্যেই পুরো শেড পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এতে ১০টি কক্ষে বসবাসরত পরিবারগুলো কোনো কিছুই বের করতে পারেনি। আগুনের সময় অন্তত সাতটি পরিবার ঘুমিয়ে ছিল। তীব্র তাপে ঘুম ভাঙলেও ঘর থেকে সামান্য জিনিসপত্রও বাঁচানো সম্ভব হয়নি।
খবর পেয়ে গোয়ালন্দ ফায়ার সার্ভিস দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকেই আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের দাবি, এ ঘটনায় অন্তত ৩০ লাখ টাকার বেশি ক্ষতি হয়েছে। বর্তমানে অসহায় পরিবারগুলো খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবনযাপন করছে।
বুধবার (১ অক্টোবর) বেলা ১১টার দিকে সরেজমিনে দেখা যায়, শেডটি সম্পূর্ণ ভস্মীভূত হয়ে গেছে। চারদিকে পোড়া আসবাবপত্র ও ছাই ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। কেউ পোড়া জিনিসপত্র সরাচ্ছেন, কেউ আবার চোখের জলে হারানো সম্বল খুঁজছেন। একটি ছোট্ট শিশু ভাঙা স্তূপের ভেতর থেকে তার পোড়া বই হাতে তুলে নিচ্ছিল।
বাসিন্দা ফুলচাঁদ সরদার বলেন,
রাত ১টার দিকে ঘুমিয়ে পড়ি। হঠাৎ চিৎকার শুনে ঘুম ভাঙে। আগুনের তাপে শরীর জ্বলতে থাকলে দ্রুত ঘর থেকে বের হয়ে আসি।
আরেক বাসিন্দা শাহেদা খাতুন কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানান,
আমার একমাত্র সন্তান স্বাধীনকে নিয়ে আমি একা থাকি। অনেক কষ্টে কাজ করে বিদেশে পাঠানোর জন্য দুই লাখ টাকা জমিয়েছিলাম। সেদিন আমি গ্রামের বাড়িতে অনুষ্ঠানে ছিলাম। ফিরে এসে দেখি আমার সব স্বপ্ন আগুনে ছাই হয়ে গেছে।
আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত ১০ পরিবারই এখন চরম দুর্দশায় দিন কাটাচ্ছে।
এদিকে, খবর পেয়ে বুধবার দুপুরে কেন্দ্রীয় কৃষক দলের সহসভাপতি ও রাজবাড়ী জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আসলাম মিয়া ক্ষতিগ্রস্ত প্রত্যেক পরিবারের মাঝে চাল, শুকনো খাবার, কাপড় ও আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন।
গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নাহিদুর রহমান জানান,ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর মাঝে তাৎক্ষণিক শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। ত্রাণ সহায়তার তালিকা তৈরি করে জেলা প্রশাসকের কাছে পাঠানো হয়েছে।