স্টাফ রিপোর্টার”রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলায় শিক্ষক সংকটকে দেখিয়ে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় দুটির ভর্তি কোটা অর্ধেকে নামিয়ে আনা হয়েছে। এতে বিপাকে পড়েছেন অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা। দীর্ঘদিন ধরে উপজেলাটির প্রায় সোয়া লক্ষ মানুষের জন্য মাত্র দুটি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়—গোয়ালন্দ নাজির উদ্দিন সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় এবং গোয়ালন্দ শহীদ স্মৃতি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় শিক্ষাসেবায় নিয়োজিত।
বিগত বছরগুলোতে দুটি বিদ্যালয়ে প্রায় ১১০ জন করে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হলেও এবার শিক্ষক সংকট ও ক্লাস নেওয়ার অপারগতার কারণ দেখিয়ে ভর্তি সংখ্যা কমিয়ে ৫৫ জনে সীমিত করেছে কর্তৃপক্ষ। ফলে দুটি বিদ্যালয়ে মোট ভর্তির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে মাত্র ১১০ জন।
অভিভাবকদের অভিযোগ, শিক্ষক কম থাকা সত্ত্বেও পূর্বে ১১০ জন ভর্তি করানো হয়েছিল এবং তা পরিচালনাও সম্ভব ছিল। এবার নতুন যোগদানকারী কিছু শিক্ষকের আবেদনের ভিত্তিতে ভর্তি কোটা কমানো হয়েছে, যা ভবিষ্যতে শিক্ষার ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। তাদের মতে, শিক্ষক বদলি বা নতুন নিয়োগ হতে পারে, কিন্তু একবার ভর্তি কোটা কমলে পুনরায় বাড়াতে সময় ও জটিলতা তৈরি হবে।
পদ্মা নদীবেষ্টিত, বারবার ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত এই উপজেলার অধিকাংশ মানুষ আর্থিকভাবে দুর্বল। বেসরকারি স্কুলের উচ্চ টিউশন ফি, ভর্তি ফি এবং কোচিং খরচের কারণে স্বল্প আয়ের পরিবারগুলো সরকারি স্কুলের ওপর নির্ভরশীল। ফলে ভর্তি সংকোচনের কারণে অনেক শিক্ষার্থী পড়াশোনার সুযোগ হারাতে বসেছে, কেউ কেউ বাধ্য হয়ে পার্শ্ববর্তী জেলায় ভর্তি হতে যাচ্ছে।
স্থানীয় শিক্ষানুরাগী, রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ ও সাংবাদিকরা একাধিকবার উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকে বসলেও কোনো সুরাহা মেলেনি।
গোয়ালন্দ সরকারি কামরুল ইসলাম কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ কে. এ. মহিত হীরা, রাবেয়া ইদ্রিস মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল কাদের শেখ, উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো. নিজাম উদ্দিন শেখসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দও বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব মো. আবু সাইদ মন্ডল অভিযোগ করে বলেন,আমার মেয়ে শহীদ স্মৃতি সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ে পড়ে। বাইরে থেকে আসা কয়েকজন শিক্ষক ভর্তি কোটা কমানোর প্রস্তাব দেন, বোর্ড তা মেনে নেয়। অথচ একই এলাকায় গোয়ালন্দ প্রপার হাইস্কুলে ২২০ জন শিক্ষার্থীকে একটি শ্রেণিকক্ষে গাদাগাদি করে পড়ানো হচ্ছে। দুটি কিন্ডারগার্টেনে ১১০ জন করে ভর্তি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে সেগুলো কি উপজেলা শিক্ষা অফিস পরিদর্শন করেছে?
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাথী দাস বলেন,
এটি বোর্ড কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত। এখানকার শিক্ষকদের আবেদনের ভিত্তিতেই ভর্তি কোটা কমানো হয়েছে। তারা যদি আবেদন প্রত্যাহার করেন, তাহলে বোর্ডের সঙ্গে পুনরায় আলোচনা সম্ভব।