স্টাফ রিপোর্টারঃ
টিকা নিবার আইছি মাস্ক পরবো কেন? আমাগের মাস্ক পরা লাগেনা। আমাগের করোনা অবেনা মাট ঘাটে কাজ করি করোনা অবি না।
এমনই বলছিলেন টিকা নিতে আসা পঞ্চাশউর্ধো বয়সের করিম সরদার। তিনি আরো বলেন, এখন আর করোনা নাই মাস্ক পরে কি হবে। আল্লাহ বাচাইলে বাচাবে মারলে মারবে।
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে হাসপাতালে প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজের টিকা নিতে আসা নানা বয়সী মানুষের ভিড় পড়ে। এসময় বেশিরভাগ মানুষেরই মুখে মাস্ক দেখা যায়নি। তাছাড়াও বসার মতো পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় এসব মানুষকে দুর্ভোগে পড়তে হয়।
বৃহস্পতিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) গোয়ালন্দ উপজেলার ৫০ শয্যার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে দেখা যায়, উপজেলার বিভিন্ন জায়গা থেকে টিকা নিতে ছুটে এসেছেন অনেকে। টিকা প্রদানের কক্ষের বাইরে বারান্দায় দুটি বেঞ্চ থাকলেও গাদাগাদি করে তাতে কিছু মানুষ বসার সুযোগ পান। কোথাও বসার মতো জায়গা না থাকায় এক-দুই ঘন্টার বেশি সময় লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়।
নারী-পুরুষ ঠাসাঠাসি করে একজন আরেকজনের সাথে গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। এ সময় বয়স্ক বৃদ্ধ নারী-পুরুষকে বাড়তি দুর্ভোগ পোহাতে দেখা যায়। টিকা কক্ষের বাইরে নিবন্ধন ঠিক আছে কি না যাচায়ের জন্য বাইরেও ছিল ভিড়।
গোয়ালন্দ পৌর ১নং ওয়ার্ড ওলিমদ্দিন পাড়া গ্রাম থেকে টিকা নিতে এসেছেন গোলাম মওলা (৩৫)। তিনি আগেভাগে টিকা নিবেন বলে সকাল ৯টার দিকে হাসপাতালে আসেন। এসেই দেখেন লম্বা লাইন তৈরী হয়েছে। তিনিও লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকেন। বেলা বারার সাথে সাথে লাইন আরো বড়ো হয়। কেউ বারান্দায় আবার কেউ বাইরে গাদাগাদি করে অবস্থান নেন। তিনি প্রায় আড়াই ঘন্টা পর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে টিকা নিতে সক্ষম হন।
উজানচর থেকে ইদ্রিস সরদার (৬৫) নামের এক বৃদ্ধ টিকা নিতে চলে আসেন হাসপাতালে। তার মুখে তো দুরের কথা লাছেই মাস্ক নাই। কেন নেই? এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, টিকা বিতে আইছি মাস্ক আনবো কেন?
এমন আরো অনেকেই মাস্ক ছাড়াই চলে এসেছেন টিকা নিতে। মাস্কতো দুরের কথা সামাজিক দুরত্বও মানছেন না কেউ।
অনার্স ৩য় বর্ষের ছাত্র রেজাউল করিম, তিনিও মাস্ক ছাড়া ভীড়ের মধ্যে স্ক্যানের ম্যানের কাছে ভীড় কতছেন। তিনি মাস্ক কেন পড়েন নাই এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, ভাই খুব গরম লাগে মাস্ক কতক্ষন পরে থাকবো?
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আসিফ মাহমুদ বলেন, বৃহস্পতিবার প্রায় এক হাজার মানুষের টিকা প্রদান করা হয়েছে। যাদের রেজিষ্ট্রেশন করা হয়েছে এবং তারিখ এসেছে তাদের টিকা প্রাদান অব্যাহত থাকবে।
সামমাজিক দুরত্ব ও মাস্কের বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এব্যাপারে আমাদের পক্ষ থেকে বার বার বলা হলেও কেউ মানতে চায় না। সাময়িক বলার পরে মাস্ক পরিধান করলেও তা কিছুক্ষন পর খুলে ফেলছে। আমরা কি করতে পারি। আর হাসপাতালে পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় বসার ব্যবস্থা করা সম্ভব হয়নি বলে তিনি দাবী করেন।