রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে চিকিৎসকের সংকট সৃষ্টি হয়েছে। সেখানে আধুনিক অপারেশন থিয়েটারটি বহু বছর যাবৎ তালাবদ্ধ। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সংকটের পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ অপারেশন থিয়েটারটি বন্ধ থাকায় উপজেলা এলাকার সাধারণ মানুষ স্বাস্থ্যসেবার সামান্যতম সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। সরকারি ওই হাসপাতালে এসে প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা না পেয়ে অনেক রোগী রাজবাড়ী, ফরিদপুরসহ বাইরের বিভিন্ন প্রাইভেট ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে যেতে বাধ্য হচ্ছেন।
গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ৫০ শয্যাবিশিষ্ট গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালটি উপজেলার দেড় লক্ষাধিক মানুষের একমাত্র ভরসাস্থল। প্রতিদিন গড়ে চার শতাধিক রোগী এখানে সেবা নিতে আসেন। কিন্তু দীর্ঘদিন যাবৎ সেখানে গুরুত্বপূর্ণ সার্জারি, কার্ডিওলজি, চর্ম ও যৌন রোগ, অ্যানেসথেসিয়াসহ ৬টি জুনিয়র কনসালটেন্ট পদ শূন্য হয়ে আছে। এদিকে এই হাসপাতালে মেডিক্যাল অফিসার রয়েছেন মাত্র সাতজন। এর মধ্যে দুজন মেডিক্যাল অফিসার প্রেষণে ঢাকায় চলে গেছেন। অপর পাঁচ মেডিক্যাল অফিসারের ওপর ভর করেই চলছে গোয়ালন্দ উপজেলা হাসপাতালটির জরুরি বিভাগ, ইনডোর, আউটডোর, মেডিক্যাল টিম, ফিল্ড ভিজিটসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্যসেবা।
তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, জুনিয়র কনসালটেন্ট (শিশু) ডা. আলাউদ্দিন ২০১৮ সালের ২০ অক্টোবর গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে যোগদান করেন। যোগদানের পর মাত্র তিন দিন তিনি সেখানে উপস্থিত ছিলেন। তার পর থেকে আজ পর্যন্ত চিকিৎসক অননুমোদিতভাবে তিনি তার কর্মস্থল গোয়ালন্দে অনুপস্থিত রয়েছেন। এদিকে সরকারি এই হাসপাতালে আধুনিক মানের একটি অপারেশন থিয়েটার থাকলেও প্রয়োজনীয় চিকিৎসক নেই। এ কারণে বহু বছর যাবৎ অপারেশন থিয়েটারটি তালাবদ্ধ হয়ে আছে।
গোয়ালন্দ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মোস্তফা মুন্সী কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সংকটের পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ অপারেশন থিয়েটারটি বন্ধ থাকায় উপজেলা এলাকার সাধারণ মানুষ স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। সরকারি এই হাসপালে এসে প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা না পেয়ে অনেক রোগী রাজবাড়ী, ফরিদপুরসহ বাইরের বিভিন্ন প্রাইভেট ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে যেতে বাধ্য হচ্ছেন।’
এলাকার বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর স্বার্থে গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে প্রয়োজনীয় চিকিৎসকসহ অপারেশন থিয়েটারটি দ্রুত চালু করা খুব জরুরি বলে তিনি জানান।
গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আসিফ মাহমুদ সত্যতা নিশ্চিত করে কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘সরকারি এই হাসপাতালে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকসহ নানা সংকট লেগেই আছে। প্রয়োজনীয় চিকিৎসকের অভাবে অপারেশন থিয়েটারটি অকেজো হয়ে পড়ে আছে। কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। প্রায় তিন বছর যাবৎ অননুমোদিতভাবে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকা জুনিয়র কনসালটেন্ট (শিশু) ডা. আলাউদ্দিনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করার প্রক্রিয়া চলছে।
সূত্রঃকালের কন্ঠ