লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃ
লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রাম উপজেলায় মাদ্রাসার শিক্ষিক পদে চাকুরি দেওয়ার নামে প্রতারণার অভিযোগ এনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে ভুক্তভোগী নারী শাহানাজ সুলতানা রেজিস্ট্রি করে ডাকযোগে লিখিত অভিযোগ দেন গত ১৪ মার্চ ২১ তারিখে। অভিযোগের অনুলিপি পাটগ্রাম উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকেও দেন তিনি। অভিযোগ দেওয়ার দীর্ঘ ৫ মাস পর ৪ দিন পর তদন্ত করতে নোটিশ করেছেন মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা গোলাম কিবরিয়া। ২৩ আগস্ট ইস্যুকৃত নোটিশে আগামী ৪ সেপ্টেম্বর তাঁর কার্যালয়ে সকাল ১১ টায় তদন্ত করা হবে উল্লেখ করা হয়েছে।
যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন তাদের মধ্যে ২ জনকে বাদ দিয়ে নোটিশ করেছেন জানিয়ে শাহানাজ সুলতানা বলেন, ‘তাঁরা (যে দু’জনকে নোটিশ করে ডাকেন নি) প্রভাবশালী হওয়ায় তদন্তকালীন ডাকা হয়নি। এতে তদন্তও প্রভাবিত হওয়ার আশঙ্কা করছি।’
মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা গোলাম কিবরিয়া বলেন, ‘তদন্ত প্রভাবিত হওয়ার কিছু নেই। অভিযোগে ৫ জনের মধ্যে ২ জনকে কেন ডাকা হয়নি জানতে চাইলে বলেন, তাঁরা ওই মাদ্রাসার কেউ নয়। এজন্য নোটিশ করা হয়নি।’
অভিযোগে শাহানাজ দাবি করেন, ২০০৪ সালে ওই মাদ্রাসার এবতেদায়ী শাখায় প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে ৫ জনের যোগসাজসে ৬ লাখ ৭০ হাজার টাকা নেন দহগ্রাম বালারডাঙ্গা দাখিল মাদ্রাসার সুপার মো. আজম আলী। ওই সময়ে (২০০৪ সালে) আমার বাবা শফিকুল ইসলাম আবাদী জমি বিক্রি করে ৩ লক্ষ টাকা দেন সুপারকে। অনেকদিন মাদ্রাসায় গিয়ে ক্লাস নিই। ২০১৯ সালে মাদ্রাসাটি এমপিও ভুক্ত হয়। এমপিও’র তালিকায় আমার নাম আসেনি। এমপিও ভুক্তির কথা বলে আবারও সুপার টাকা দাবি করেন। বাধ্য হয়ে গৃহপালিত পশু বিক্রি, এনজিও থেকে ঋণ ও চড়া সুদে টাকা নিয়ে ৩ লাখ ৭০ হাজার টাকা অফিস সহকারী মো. লুৎফর রহমান বুলু ও আমিনুল ইসলামের মাধ্যমে সুপারকে দেই। পরবর্তীতে চাকুরির ব্যাপারে সঠিক সুরাহা না হওয়ায় প্রধানমন্ত্রীসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করি।
শাহানাজ সুলতানা বলেন, ‘অভিযোগে ওই মাদ্রাসার (দহগ্রাম বালারডাঙ্গা দাখিল মাদ্রাসা) সুপার, শিক্ষক, অফিস সহকারি, আউলিয়ারহাট দাখিল মাদ্রাসার সুপার, চিলার বাজার মহিলা মাদ্রাসার অফিস সহকারি পরস্পর আলোচনা করে টাক নেয়। তাদেরকে ৫ জনের মধ্যে আউলিয়ারহাট দাখিল মাদ্রাসার সুপার, চিলার বাজার মহিলা মাদ্রাসার অফিস সহকারিকে নোটিশ করা হয়নি। এই তদন্ত প্রভাবিত হতে পারে বলে আমার মনে হচ্ছে। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’
এ ব্যাপারে সুপার আজম আলী বলেন, ‘অভিযোগ সত্য না মিথ্যা ওইদিন (তদন্তের দিন) কথা হবে। নোটিশ করেছে আমরা যাব। অভিযোগে ৫ জনকে অভিযুক্ত করা আছে, কিন্তু মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ৩ জনকে ডেকেছেন। আমি সবাইকে ডাকতে বলেছি। অভিযোগ তো অবশ্যই মিথ্যা।’