ষ্টাফ রিপোর্টঃ
করোনা সংক্রমণরোধে সরকারঘোষিত কঠোর বিধিনিষেধ শিথিল করায় রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ঘাটে ঢাকামুখী যানবাহন ও যাত্রীর চাপ বেড়েছে। সেই সাথে নদীতে তীব্র স্রোত বাড়ায় ফেরী চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। যার কারনে দৌলতদিয়ার ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে যানবাহনের দীর্ঘ সারি পরেছে। আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল থেকে আসা বিভিন্ন ধরনের পণ্যবাহী গাড়ি আসতে থাকায় পারাপারের জন্য লম্বা লাইন তৈরি হয়। একই সঙ্গে বিধিনিষেধ শিথিল করায় ঢাকামুখী যান ও যাত্রীদের চাপ বেড়েছে।
আজ বুধবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর পর্যন্ত দৌলতদিয়া ঘাটে অবস্থান করে দেখা যায়, ৫টি ফেরিঘাটের অধিকাংশ ঘাট ফেরিশূন্য থাকছে। যে ঘাটে ফেরি ভিড়ছে, সে ঘাটেই যানবাহন ও যাত্রীরা ভিড় করছেন। ঢাকামুখী পণ্যবাহী গাড়ির সঙ্গে দূরপাল্লার গণপরিবহন, অ্যাম্বুলেন্স, জরুরি গাড়িসহ মোটরসাইকেল পার হতে দেখা যায়। বিপরীত দিকে মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ঘাট থেকে ছেড়ে আসা ফেরিগুলোতেও দক্ষিণাঞ্চলগামী যানবাহনবোঝাই, সঙ্গে কিছুসংখ্যক যাত্রী আসতে দেখা যায়।
ফরিদপুর থেকে ঢাকা যাচ্ছেন রাজ মিস্ত্রি শরিফুল। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তিনি ফেরীতে ওঠার চেষ্টা করছিলেন। ঘাটে আলাপকালে তিনি বলেন, কঠোর বিধিনিষেধ চলায় কাজ তেমন ছিলনা। এখন তা শিথিল হওয়ায় কাজের উদ্দেশ্যে ঢাকা যাচ্ছি। গণপরিবহন চালু হওয়ায় ফরিদপুর থেকে বাসে আগের ভাড়ায় ঘাটে আয়ছি।এখন নদী পাড়ি দিতে পারলে পাটুরিয়া থেকে বাসে করে গাবতলি গিয়ে গন্তব্যে যাব।
এ ছাড়া ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে পণ্যবাহী গাড়ি ও গণপরিবহন দেখা যায়। ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের দৌলতদিয়া ক্যানালঘাট এলাকায় হাইওয়ে পুলিশের তৎপরতা দেখা যায়। মাহিন্দ্র থামিয়ে যাত্রীদের নামিয়ে দিয়ে মাহিন্দ্র ঘুরিয়ে দিতে দেখা যায়।
ঢাকা থেকে কুষ্টিয়া যাচ্ছিলেন ব্যাবসায়ী সাদেক হোসেন।বেলা সাড়ে ১০ টার দিকে দৌলতদিয়ার ৬ নম্বর ঘাটে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘ঢাকায় জ্বালানি ব্যাবসা করি।লকডাউন শেষ হওয়ায় গণপরিবহন চালু থাকায় নির্বিঘ্নে বাড়ি যাচ্ছি। বাড়িতে চাচা অসুস্থ তাই তাকে দেখে আবার দুইদিন পর ঢাকা ফিরবো।
মাগুরা থেকে লোহার কুচিবোঝাই করে যাচ্ছেন ট্রাকচালক মো. সাইফুল ইসলাম। ফেরির জন্য লম্বা লাইনে আটকে থাকা অবস্থায় বেলা ১২টার দিকে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘ মমঙ্গলবার বিকাল ৪ টায় গোয়ালন্দ মোড়ে এসে লাইনে ছিলাম।সকাল ৯ টায় সেখান থেকে ছেড়ে দিলে সকাল সাড়ে ৯টায় দৌলতদিয়া ঘাটে ফেরী পারের জন্য আসি।কিন্তু এখানে এসেও দীর্ঘ লাইনে দারিয়ে থাকতে হচ্ছে। এক্ষনও ফেরী ঘাট থেকে প্রায় দুই কি.মি. দূরে দুই ঘণ্টা ধরে আটকে আছি। এ রকম প্রায় চার শতাধিক পণ্যবাহী গাড়ি ও গণপরিবহন ফেরিতে ওঠার অপেক্ষায় রয়েছে ।’
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন সংস্থা (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা কার্যালয়ের সহকারী মহাব্যবস্থাপক আবদুস সাত্তার বলেন, লকডাউন শেষে যানবাহনের চাপ বাড়ায় ছোট-বড় মিলে ১৫টি ফেরি চালানো হচ্ছে। নদীতে স্রোত বাড়ায় ফেরী চলাচল সাময়িক ব্যাহত হচ্ছে।