কিশোরদের চিন্তাভাবনা কোন দিকে।

ষ্টাফ রিপোর্টার | রাজবাড়ী টেলিগ্রাফ / ৫৭৬ বার পড়া হয়েছে
সর্বশেষ আপডেট : বুধবার, ২ জুন, ২০২১

0Shares

কিশোর কবি বলে পরিচিত, সুকান্ত ভট্টাচার্য তার আঠারো বছর বয়স কবিতায় উল্লেখ করেছেন এই বয়সে একজন মানুষ কি করতে পারে। এই বয়সে একজন মানুষের সামনে অসম্ভব বলে কোনো কথা থাকতে পারে না। এবং এই বয়স যে দুর্বার সে কথা এই কবিতায় ফলাও করে বলা হয়েছে। এতে গেল কবির চিন্তা ভাবনার কথা কিন্তু বাস্তবে যদি আমরা আমাদের কিশোর-কিশোরীদের চিন্তা বা কাজ কর্মের দিকে তাকাই তাহলে দেখতে পাব যে আজ আমাদের কিশোরদের ভাবনা কোন দিকে ধাবিত হচ্ছে। তাদেরকে নিয়ে চিন্তা করতে গেলে অনেকগুলো প্রশ্ন মাথার ভিতর ঘুরপাক খাচ্ছে যেমন তারা কি চায় কি তাদের ভাবনা? তাহলে আসুন একটু বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা যাক তাদের ভাবনা গুলো নিয়ে। একজন মানুষ যখন কিশোর বয়সে উপনীত হয় তখন তার মধ্য অনেক রকম চিন্তা কাজ করে। সে তখন নিজেকে নিয়ে কল্পনায় বিচরণ করে, পুরো পৃথিবীটাই তার কাছে রঙিন বলে মনে হয়। আর রঙিন পৃথিবীতে তো রঙিন চিন্তায় কাজ করবে। বর্তমানে আমরা দেখি কিশোরদের একসাথে বসে অনলাইন গেম খেলছে যেটাকে বলা হচ্ছে তাদের জন্য মারাত্মক। আচ্ছা এসব কিশোরদের কি শুধু অনলাইন গেম এর কারনে খারাপ পথের দিকে ধাবিত হচ্ছে নাকি অন্য আরও কোনো কারণ রয়েছে। আসলে বর্তমানে একজন কৃষক কিছু বুঝে ওঠার আগেই তার হাতে স্মার্টফোন তুলে দেওয়া হচ্ছে। স্মার্টফোনের বদৌলতে তারা অনলাইন দুনিয়া এবং মিডিয়ার সাথে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িয়ে পড়েছে। এমন জড়িয়ে পড়ার কারণে সোশ্যাল মিডিয়ায় একত্রে অবস্থানের কারণে দেখা যায় প্রথমে বন্ধু এবং একপর্যায়ে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ছে যা অনলাইন গেম এর চাইতে মারাত্মক। তাদের এই প্রেমের সম্পর্ক এমন অবস্থায় উপনীত হয় যে কিশোরীর সাথে দেখা করার জন্য বাড়ি পর্যন্ত ঘোরাঘুরি অনেক সময় ইভটিজিং পর্যন্ত সংঘটিত হয়। আবার সমাজে এমনও দেখা যায় যে আমরা শুধু কিশোরদের এখানে একপেশে দোষী বলে পরিচিত করি। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায় এখানে সম্পর্কের ক্ষেত্রে বিপরীত লিঙ্গের দায়ী কম নয়। কারণ অনেক সময় দেখা যায় তারা কিশোরদের আকর্ষণ করে কথার মাধ্যমে যার ফলে কিশোর একসময় তাদের সাথে অবৈধ সম্পর্কে পর্যন্ত জড়িয়ে পড়ে। তাদের এমন সম্পর্কের কারণে আজ দেশে ধর্ষণের মাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর এমনটা করার কারণ হলো মুভি বা নাটকে অতিমাত্রায় প্রচার যেখানে থেকে তারা এমন ধারণা গ্রহণ করে। কিশোররা এই প্রেমের জন্য আজ হানাহানি-মারামারি পর্যন্ত সংগঠিত করেছে। আজ সমাজে কিশোর গ্যাং নামক সংগঠন সৃষ্টি হচ্ছে। এইসব গ্যাংকে সমাজের স্থানীয় রাজনীতিবিদরা নিজেদের প্রয়োজনে ব্যবহার করছে। করোণা মহামারীর কারণে এই গ্যাং এর বিস্তার বৃদ্ধি পাচ্ছে। একদিকে পড়াশোনার চাপ নেই, অন্যদিকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার ফলে নৈতিক শিক্ষা থেকে দূরে অবস্থান করছে। যার ফলে সমাজের দিকে তাকালে মনে হয় আজ আমরা জাহিলি বা অজ্ঞাত যুগে বসবাস করছি। যেখানে খুন হত্যা ইত্যাদি নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই হত্যা করলো আবার যারা সংগঠিত করছে তাদের বয়স কিশর যাদের থাকার কথা ছিল শিক্ষার সাথে সম্পৃক্ত। কিশোরদের এমন বেপরোয়া জীবন-যাপন একদিন যে এই সমাজকে মারাত্মক ক্ষতির দিকে নিয়ে যাচ্ছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।

লেখক,
জাফরুল ইসলাম
শিক্ষার্থী রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
০১৭৫৪৭৬৪০২৫
zafrulislam217@gmail.com

Facebook Comments


এ জাতীয় আরো খবর
NayaTest.jpg