শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড,মেরুদন্ড বিহীন যেমন একজন মানুষ দাঁড়াতে পারে না ঠিক তেমনি শিক্ষা ছাড়া একটা জাতি সোজা হয়ে দাঁড়াতে সক্ষম নয়। দেশ এবং জাতিকে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে শিক্ষার গুরুত্ব অপরিসীম, শিক্ষিত মানুষ দেশের জন্য বোঝা নয় বরং আশীর্বাদ। যে জাতি যত বেশি শিক্ষিত সে জাতি তত বেশি উন্নত। পশ্চিমা বিশ্বের দিকে নজর দেই তাহলে তারা যে আজ উন্নয়নের জোয়ারে ভাসছে তা একমাত্র সম্ভব হয়েছে শিক্ষার মাধ্যমে। আমার এদেশের স্বাধীনতার পূর্ববর্তী চিত্র দেখি তাহলে দেখতে পায় সে সময় পূর্ব পাকিস্তান অর্থাৎ আমাদের বাংলাদেশে পশ্চিম পাকিস্তানের আমার এদেশের স্বাধীনতার পূর্ববর্তী চিত্র দেখি তাহলে দেখতে পাই সে সময় পূর্ব পাকিস্তান অর্থাৎ আমাদের বাংলাদেশ পশ্চিম পাকিস্তান কতৃক যে বৈষম্যের শিকার হয়েছিল সেখানে শিক্ষা ও ছিল। অর্থাৎ পূর্ব-পাকিস্তানের উচ্চশিক্ষার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় ছিল দুইটি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। এরমধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বৃটিশ শাসন আমলে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। আর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় হাজার ১৯৫৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল তাও ২৩ বছরের শাসন আমলে। যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে দেশের কার হার ছিল ২০ থেকে ৩০ শতাংশ, দেশের দুই তৃতীয়াংশ মানুষ ছিল যারা শিক্ষিত না অথ্যৎ তারা তাদের নিজেদের নাম সই পর্যন্ত দিতে পারত না। নানান উত্থান-পতনের পর আজকে বাংলাদেশ তার স্বাধীনতার ৫০ বছর পার করতে চলছে এই ৫০ বছরে বাংলাদেশে শিক্ষার ক্ষেত্রে অনেক উন্নত করেছে আজ বাংলাদেশের শিক্ষিতের হার ৭২ থেকে ৮০ শতাংশ। এছাড়াও দেশে বর্তমানে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ৪৯ টি আরো কিছু বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণের প্রস্তুতি নিয়েছে সরকার। এখন এত বিশ্ববিদ্যালয় এত যে শিক্ষিত জনগণ রয়েছে আমাদের দেশে তবুও কি শিক্ষার প্রকৃত উদ্দেশ্য পূরণ হয়েছে? দার্শনিক সক্রেটিস বলেছেন know thyself নিজেকে জানো। আসলে শিক্ষার প্রকৃত উদ্দেশ্য হলো নিজেকে জানতে হবে নিজের বিবেক বুদ্ধিকে জাগ্রত করতে হবে যেগুলো সুপ্ত অবস্থায় ছিল। আজ যখন আমরা উচ্চশিক একজন ব্যক্তির দিকে লক্ষ করি দেখতে পাই তার কাছে শিক্ষার প্রকৃত উদ্দেশ্য হলো স্নাতক সম্পন্ন করে বিসিএস দিয়ে সরকারি আমলা হিসেবে জীবনটা গঠন করা। আবার এমনও দেখা যায় যে একজন শিক্ষিত ব্যক্তি যে কিনা সরকারি প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করেছে যেখানে দেশের মানুষেরা শিক্ষা খরচ চালাই, সেই ব্যক্তি চাকুরী করার সময় অসাধু উপায় অবলম্বন এর মাধ্যমে মানুষের কাছ থেকে ঘুষের টাকা গ্রহন করে। শুধুমাত্র নিজের উন্নতির কথা চিন্তা করে তারা এমনটা করে। একবারও সে ভাবে না যে দেশের সাধারণ মানুষের কাছে দায়বদ্ধ কারণ, এই মানুষগুলোই পরোক্ষ ভাবে তার পড়াশোনার ভার বহন করেছিল। এই যদি হয় দেশের উচ্চশিক্ষিতদের অবস্থান, তাহলে ঘটা করে শিক্ষিতদের সংখ্যা বৃদ্ধি করে কোন লাভ রয়েছে দেশের জন্য। একজন শিক্ষিত মানুষ নিজের কথা চিন্তা না করে দেশের কথা চিন্তা করা উচিত সেখানে ব্যক্তিকেন্দ্রিক চিন্তাগুলোই আজ এই জাতিকে গ্রাস করেছে। তাই শিক্ষার প্রকৃত উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করার জন্য প্রয়োজন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বৃদ্ধি করা নয়, বরং শিক্ষার মান বৃদ্ধি করা। শুধু মুখস্ত করে দুই হরফ খাতায় লিখে বেশি নম্বর দিয়ে ডিগ্রী হাসিল করা নয় বরং চিন্তাভাবনা এবং গবেষণা কেন্দ্রিক শিক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে দেশ ও জাতির উন্নয়ন সাধন করতে হবে। তবে দেশ সামনের দিকে এগিয়ে যাবে এমন প্রত্যাশা দেশের নাগরিকদের।
জাফরুল ইসলাম
শিক্ষার্থী রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
০১৭৫৪৭৬৪০২৫