সাইফুল ইসলাম, মানিকগঞ্জ :
মহামারী করোনা প্রাদুর্ভাবের সংকটকালীন সময়ে মানিকগঞ্জের ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট আধুনিক জেনারেল হাসপাতাল পরিণত হয়েছে কুকুরের অভয়ারণ্যে।
মানিকগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের পুরাতন ভবনের নিজ তলায় জরুরী বিভাগ, তত্বাবধায়ক ও আবাসিক চিকিৎসকের অফিস, প্রসুতি বিভাগ সহ স্পর্শকাতর সেবা কেন্দ্র রয়েছে। এসব কেন্দ্রের সামনে রোগী ওয়ার্ডের যাতায়াতের রাস্তায় সাড়িবদ্ধভাবে কুকুরগুলো ঘুমাতে দেখা যায় প্রতিনিয়ত। চলমান এই লকডাউনে দেশ যখন করোনা ও ডায়রিয়ার আতঙ্কে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে ঠিক সেই মুহুর্তে মানিকগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের ভিতরে কুকুরের অভয়ারণ্য। হাসপাতাল কর্র্র্তৃপক্ষের এমন উদাসিন ভুমিকায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীরা রযেছেন চরম স্বাস্থ্যঝুঁিকতে। হাসপাতাল ভবনের ভেতরে কুকুরের অবাধ বিচরনের কারণে রোগীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এক সময়ের আধুনিক সদর হাসপাতাল বর্তমানে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের পুরাতন ভবনের আবাসিক মেডিকেল অফিসারের রুমের সামনে, তত্বাবধায়কের রুমের সামনে সাড়িবদ্ধভাবে একাধিক কুকুর নির্বিঘ্নে ঘুমাচ্ছে। অথচ এ বিষয়ে হাসপাতাল কর্র্র্র্তৃপক্ষের তেমন কোন নজরদারি নেই। এ যেন রোগী নয়, কুকুরের নিরাপদ অভয়ারণ্য।
চিকিৎসা নিতে আসা রোগীর স্বজন রাজা বলেন, এই করোনাকালীন সময় সরকার যখন পুরো দেশবাসীকে সচেতন এবং পরিস্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে নানামুখী কর্মসূচী নিচ্ছে সেই মুহুর্তে হাসপাতালের ভিতরে কুকুরের অবাধ আনাগোনা কাম্য নয়। কারণ কুকুর জলাতংক রোগ বহন করে। সেই কুকুরগুলো হাসপাতালের মেঝেতে শুয়ে রয়েছে। হাসপাতালটি কতটুকু স্বাস্থ্যসম্মত তা দেখেই বোঝা যাচ্ছে।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরেক রোগীকে দেখতে আসা স্বজন ফালাক বলেন, দেশ যখন হাজার হাজার মানুষ প্রতিনিয়তই করোনায় আক্রান্ত হচ্ছে ঠিক সেই মুহুর্তে চিকিৎসা সেবাকেন্দ্র হাসপাতালে যদি এমনভাবে কুকুর শুয়ে থাকে তা হলে সেই হাসপাতালে রোগী কতটুকু নিরাপদ তা হাসপাতাল কর্র্র্তৃপক্ষই জানেন। আমরা যখন নিজ গৃহেই করোনা থেকে নিরাপদ নই, হাসপাতাল কর্র্তপক্ষের এমন উদাসিনতায় আমাদের মাননীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সুনাম ক্ষুন্ন করছে।
এ বিষয়ে হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ রাসেল বলেন, আমি ওয়ার্ডবয়দের বলে রেখেছি যাতে কুকুর বা অন্য কোন প্রাণী যাতে হাসপাতালের ভেতরে ঢুকতে না পারে। আজ সকালে আমি নিজেও কুকুর তাড়িয়ে দিয়েছি। এরপর থেকে প্রয়োজনে দুইবেলা কুকুর তাড়ানো হবে।
তত্বাবধায়ক আরশাদ উল্লাহ্র মোবাইল ফোনে বার বার ফোন দিয়েও তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
এ ব্যাপারে সিভিল সার্জন ডা: আনোয়ারুল অমিন আখন্দ বলেন, এ বিষয়ে খোঁজ নিচ্ছি। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।