গোয়ালন্দে তৈরি হচ্ছে রং-চিনির মিশ্রণে ‘খাঁটি’ আখেঁর গুড়

জহুরুল ইসলাম হালিম / ৬০২ বার পড়া হয়েছে
সর্বশেষ আপডেট : মঙ্গলবার, ৬ এপ্রিল, ২০২১

0Shares

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার মোকবুলের দোকান নামক এলাকায় পবিত্র মাহে রমজানকে সামনে রেখে চিনি, আটা, ক্ষতিকর রং ও কেমিক্যাল মিশিয়ে আখের গুড় তৈরির অভিযোগ পাওয়া গেছে । এ সকল নকল গুড় উচ্চ দামে বিক্রি হচ্ছে খাঁটি গুড়ের লেবেল লাগিয়ে।

গুড় তৈরির সঙ্গে সরাসরি জড়িত স্থানীয় মকবুলের দোকান সংলগ্ন চর ধোপাখালী গ্রামের গোপাল শেখের ছেলে আবজাল শেখ।

সরজমিন শনিবার দুপুরে চর ধোপাখালী আবজাল শেখের বাড়িতে গিয়ে ভেজাল গুড় তৈরির দৃশ্য দেখা গেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আবজাল শেখ মাহে রমজানকে সামনে রেখে আটা, চিনি, বার্নিশ (কাঠে ব্যবহৃত) এবং মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর রং ও কেমিক্যাল দিয়ে ভেজাল আখেঁর গুড় তৈরি করে আসল গুড় হিসেবে অধিক মূল্যে বাজারে বিক্রি করেন। এতে সাধারণ মানুষ প্রতারিতসহ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

স্থানীয়রা আরো জানান, আবজাল শেখ স্থানীয় বাজার গুলোতে যেমন- গোয়ালন্দ বাজার, খানখানাপুর বাজার, সম্রাট নগর বাজার, বসন্তপুর (হাট) বাজার, আরিফ বাজার, আনন্দ বাজারসহ এ অঞ্চলের প্রধান গুড় সরবরাহকারী। তিনি প্রতিনিয়ত শতশত কেজি ভেজাল গুড় উৎপাদন করে চলেছেন। ভেজাল গুড় তৈরির অপরাধে ইতিপূর্বে তিনি ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে ১লক্ষ ২৫ হাজার টাকা জরিমানা দিয়েছেন। এরপর কিছুদিন বন্ধ রাখলেও রোজাকে সামনে রেখে আবারো ভেজাল গুর তৈরি শুরু করেছেন পুরোদমে।

ভেজাল গুড় প্রস্তুতকারী আবজাল শেখ বলেন, রাজবাড়ীর পাংশা থেকে তিনি বেশী করে এক জ্বাল দেয়া আখেঁর গুড় নিয়ে আসেন। গুড় তৈরির ক্ষেত্রে তিনি ৫০ কেজি পরিমান এক জ্বাল দেয়া আখেঁর গুড় ও ২৫ কেজি সাদা চিনি ব্যাবহার করেন। তারপর গুড়-চিনির মিশ্রন আগুনে জালিয়ে টিনের ছোট ছোট গ্লানে গুড় তৈরি করেন। এতে মিষ্টিতে ব্যবহৃত রং ব্যবহার করেন তিনি। এছাড়া কোনো কেমিক্যাল ব্যবহার করেন না বলে তার দাবি। এক-তৃতীয়াংশ সাদা চিনি মেশানোর ব্যাপারে তিনি দাবী করেন, এটা তিনি কতৃপক্ষকে জানিয়েই মেশান। এতে গুড় শক্ত ও সাদা হয়। গুড় তৈরির জন্য তার লাইসেন্স রয়েছে বলেও তিনি দাবি করেন। তবে সেটা দেখাতে পারেননি। নবায়নের জন্য অফিসার সূর্য কুমারের কাছে দিয়েছেন বলে জানান।

তবে গুড় তৈরির চুলায় ও পাশে গুড়ের সঙ্গে কেমিক্যালের মিশ্রণ দেখা যায়। এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।

এ বিষয়ে রাজবাড়ী জেলা স্যানিটারি ইন্সপেক্টর সূর্য কুমার প্রামাণিক বলেন, ভেজাল খাদ্য উৎপাদন ও খাদ্যের সঙ্গে ক্যামিক্যালের মিশ্রণ করা গুরুতর অপরাধ। ইতিপূর্বে এ অপরাধে আবজালকে জরিমানা করা হয়। রোজার আগে আমরা আবারো ভেজাল বিরোধী অভিযান পরিচালনা করবো। অপরাধী কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।

Facebook Comments


এ জাতীয় আরো খবর
NayaTest.jpg