পদ্মায় চলছে নীরব অবৈধ চাঁদাবাজি

নিউজ ডেস্ক | রাজবাড়ী টেলিগ্রাফ / ৭৯১ বার পড়া হয়েছে
সর্বশেষ আপডেট : শুক্রবার, ২ এপ্রিল, ২০২১

0Shares

ইসলাম, মানিকগঞ্জ: মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে পদ্মা নদীতে জাহাজ ও বলগেট থেকে চলছে অবাধ চাঁদাবাজি। দীর্ঘদিনের এই চাঁদাবাজি দেখেও না দেখার তালবাহানায় স্থানীয় প্রশাসন।

জানা গেছে, পাটুরিয়া ও বাঘাবাড়ি নৌ-রুটে পণ্যবাহী জাহাজ ও বালুুবাহী বলগেট থেকে দীর্ঘ ১৮ বছর যাবৎ অবৈধভাবে চাঁদাবাজি করছে উজ্জল, লালমিয়া ও দুলাল সুত্রধর সহ স্থানীয় একটি প্রভাবশালী চক্র। সংঘবদ্ধ এ চক্রটি জাহাজ ফেডারেশনের নাম ভাঙ্গিয়ে পদ্মার মাঝ নদীতে ট্রলার যোগে প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পণ্যবাহী জাহাজ ও বলগেট থেকে চাঁদা তুলে। নিয়মিত এসব চাঁদা তোলার জন্য রযেছে নির্ধারিত ট্রলার, মাঝি ও ম্যানেজার।
চাঁদা আদায়ের জন্য প্রতিদিন ট্রলারের ভাড়া ১ হাজার, মাঝির বেতন ৪ থেকে ৫’শ টাকা হারে এই সব লোক চাঁদা আদায়ের জন্য সকাল-সন্ধ্যা পদ্মা নদীতে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। উজ্জল এবং লাল মিয়া নিজেদের মধ্যে সমন্বয় করে পাটুরিয়া থেকে বাঘাবাড়ি নৌ-রুটে জাহাজ থেকে প্রকাশ্যে চাঁদা আদায় করছে। উজ্জল নদী থেকে চাঁদা তোলে মাসে ১৩ দিন। বাকী ১৭ দিন চাঁদা তোলে লালমিয়া। আর বলগেট থেকে সারা বছর চাঁদা তোলে দুলাল সুত্রধর। এদের প্রত্যেক জনের রয়েছে চাঁদা তোলার নির্ধারিত ট্রলার ও মাঝি-মাল্লা। প্রতিদিন পাটুরিয়া-বাঘাবাড়ী নৌ-রুটে শত শত পণ্যবাহী জাহাজ ও বালুবাহী বলগেট থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। এই চাঁদাবাজির আদায়কৃত টাকা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা এবং প্রশাসনের এক শ্রেনীর কর্মকর্তার মধ্যে ভাগ-বন্টন হয়। অবৈধ চাঁদা আদায়ের দায়ে উজ্জলকে পুলিশ একাধিক বার গ্রেফতার করলেও বন্ধ হয়নি তার চাঁদাবাজি।
পদ্মা নদীতে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হরিরামপুর উপজেলার বাহাদুরপুর খেয়াঘাট এলাকায় রয়েছে চাঁদাবাজ চক্রের লোকজন। ওই খেয়াঘাট থেকে ট্রলার যোগে মাঝ নদীতে পণ্যবাহী জাহাজ-বলগেট থেকে চাঁদা তুলছে উজ্জল ও দুলাল সুত্রধরের লোকজন। উজ্জলের লোক বড় ট্রলার ব্যবহার করে পণ্যবাহী জাহাজ থেকে চাঁদা তোলে। দুলাল সুত্রধরের লোকজন বালুবাহী বলগেট ছোট ট্রলার দিয়ে চাঁদা তুলে।
চাঁদা আদায়ে ব্যবহৃত ট্রলারের মাঝি কামাল হোসেন জানান, বাঘাবাড়ী নৌ-বন্দর থেকে ছেড়ে আসা পণ্যবাহী জাহাজের সাড়েংদের নৌ-পথ সনাক্ত করার জন্য উজ্জল এবং লালমিয়া সদরঘাট থেকে অনুমতি এনে আমাদের দিয়ে ট্রলারযোগে নির্ধারিত হারে টাকা আদায় করাচ্ছে।
এ বিষয়ে উজ্জলের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি ১৮ বছর যাবৎ এই কাজ করছি। ১৪ বছর যাবত ঢাকার সদরঘাট জাহাজ ফেডারেশনের নেতা শাহ্ আলমের নিকট থেকে অনুমতি নিয়ে টাকা আদায় করছি। আরিচার বিআইডব্লিউটিএ’র অফিসারদের সাথে আমার ভাল সম্পর্ক রয়েছে।
হরিরামপুরের ঝিটকা বাজারে দুলাল সুত্রধরের দোকানে গিয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তিনি এই প্রতিবেদকের সাথে দেখা করেনি।
এ বিষয়ে বিআইডব্লিউটিএ আরিচা নদী বন্দরের ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক মোহাম্মদ মাসুদ পারভেজের মুঠোফোনে বার বার ফোন দিয়েও তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
এ ব্যাপারে হরিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুঈদ চৌধুরী বলেন, পদ্মা নদীতে নৌ-রুট মার্কিং এর নামে টাকা আদায়ের কথা শুনেছি। কেউ অভিযোগ করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Facebook Comments


এ জাতীয় আরো খবর
NayaTest.jpg