সাইফুল ইসলাম, মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি: মানিকগঞ্জের দৌলতপুরে মৎস্য অধিদপ্তর থেকে নিবন্ধিত জেলে কার্ডের চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। গত সোমবার দৌলতপুর উপজেলা খাদ্য গুদাম কার্যালয় থেকে জেলেদের খাদ্য সহায়তার চাল বিতরণে এ অনিয়মর ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ রয়েছে।
কার্ডধারী জেলেদের সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রত্যেক কার্ডধারী জেলের জন্য ৮০ কেজি করে চাল বরাদ্দ থাকলেও তারা কার্ডপ্রতি ৭৫ থেকে ৭৮ কেজি চাল পেয়েছেন। তবে কি কারণে বরাদ্দের চেয়ে কম চাল পেয়েছেন সে বিষয়ে কার্ডধারীরা কিছুই জানেন না।
সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, জেলেদের বিনামূল্যে চাল বিতরণে দায়িত্ব প্রাপ্ত অফিসার মোঃ সুমন মিয়া কিছু জেলেদের চাল বুঝিয়ে দিয়ে অফিস ছেড়ে চলে যান। পরে ওই অফিসের পিয়নের উপস্থিতিতে জেলে কার্ডের চাল বিতরণ করা হচ্ছে। এ সময় উপজেলার বাচামারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও বাঘুটিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জেলেদের নিয়ে খাদ্য গুদাম থেকে বিতরণকৃত চাল বুঝে নিচ্ছেন। এসময় উপজেলা খাদ্য গুদাম থেকে সরবরাহকৃত চালের বস্তায় ওজন কম থাকার অভিযোগ পেয়ে ডিজিটাল ওজন যন্ত্রে চাল ওজন করে দেখা যায় কোন বস্তায় ২৮ কেজি চাল রয়েছে। আবার কোন বস্তায় ২৯ কেজি চাল রয়েছে। তবে অল্প কিছু বস্তায় চালের পরিমাণ ৩০ কেজি পাওয়া গেছে।
কার্ডধারী একাধিক জেলে জানান, ৮০ কেজি চাল পাওয়ার কথা থাকলেও আমাদের চাল কম দেওয়া হচ্ছে। চালের বস্তায় ৩০ কেজি চাল থাকার কথা থাকলেও বস্তায় ২৮ থেকে ২৯ কেজি চাল থাকে। কি কারণে আমাদের চাল কম দেওয়া হয় সেটা আমরা জানিনা।
বাচামারা চেয়ারম্যান ও বাঘুটিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জানান, খাদ্য গুদাম থেকে সরবরাহকৃত চাল সবসময়ই ওজনে কম থাকে। তাদের স্কেলে দেখায় চালের পরিমাণ ঠিক আছে। তবে বাইরে গিয়ে ওজন করলেই দেখা যায় প্রতি বস্তায় ২-৩ কেজি চাল ওজনে কম। এ বিষয়ে কখনো কোন প্রতিবাদ করেছেন কি’না জানতে চাইলে বলেন, অনেক চেষ্টা করেছি লাভ হয়নি। তাদের যা মনে চায় তারা তাই করে, এগুলো দেখার কেউ নেই।
এ ব্যাপারে দৌলতপুর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা মোঃ সুমন মিয়া বলেন, আমাদের অফিস থেকে চাল কম দেওয়া হয়না। চাল বিভিন্ন জায়গা থেকে আসে, বস্তায় হুক লাগানো হয়, ওই সব বস্তা নামানো-উঠানো হয়। কিছু বস্তা ছিড়াফাটা থাকে। ওইসব বস্তায় চালের পরিমাণ কিছুটা কম থাকতে পারে।
এ বিষয়ে দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ ইমরুল হাসান বলেন, যদি ইনটেক বস্তায় চাল কম থাকে সেটা নিয়ে কিছু করার নেই। তবে চালের বস্তা যদি খুলে বা ছিড়ে চাল কমানো হয় তাহলে আইনী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।