জহুরুল ইসলাম হালিম : বিদায় নিচ্ছে শীত, প্রকৃতির আপন খেয়ালে বসন্তের আগমন। ফাগুনের আগুন রাঙারুপে সাজছে প্রকৃতি। ফুলে ফুলে সুবাসিত হতে যাচ্ছে চারদিক। মৌমাছিরা মধু আহরণে ব্যস্ত হয়ে পরবে।
‘‘আয় ছেলেরা, আয় মেয়েরা, ফুল তুলিতে যাই, ফুলের মালা গলায় দিয়ে, মামার বাড়ি যাই। ঝড়ের দিনে মামার দেশে আম কুড়াতে সুখ, পাকা জামের মধুর রসে রঙিন করি মুখ…।’’
পল্লীকবি জসীম উদ্দিনের লেখা ‘মামার বাড়ি’ কবিতার বাস্তব রূপ পেতে আর মাত্র ক’দিন।
মধুমাসের আগমনী বার্তা শোনাচ্ছে প্রকৃতি, এখনই গাছে গাছে ফুটছে আমের মুকুল। চারদিকে ছড়িয়ে পড়ছে এই মুকুলের পাগল করা ঘ্রাণ। ফুলের ঘ্রাণে মৌ মৌ চারদিক।
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, বাড়ির উঠানে আম গাছে শোভা পাচ্ছে মুকুল। বাতাসে মুকুলের সুবাসিত পাগল করা ঘ্রাণ। গাছের আমপাতার সবুজ বিছানায় মুকুলের সোনালী রেণু যেনো ফুলশয্যাা সাজিয়ে স্বাগত জানাচ্ছে ফাগুনকে।
সেই সাথে বিদায় নিতে শুরু করছে শীত। তবে আবহাওয়ার ওপর আমের ফলন নির্ভর করে । আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এ বছর আমের ফলন ভালো হবে।। ইতিমধ্যে কিছু গাছে মুকুল আসা শুরু হয়েছে। গাছের পুরো মুকুল ফুটতে আরও কয়েক সপ্তাহ লাগবে।
উপজেলার দৌলতদিয়া ৬ নম্বর ফেরি ঘাটে গিয়ে দেখা যায় তিন বছর আগে রোপন করা আম গাছ সেজেছে মুকুলে। মো. কামাল হোসেন জানান, প্রায় দুই সপ্তাহ আগে থেকে তার লাগানো আম গাছটিতে মুকুল আসা শুরু হয়েছে। আশেপাশের গ্রামে কিছু গাছ মুকুলে ছেয়ে গেছে। বেশিরভাগ গাছে মুকুল বের হচ্ছে। মুকুল আসার পর থেকেই তারা গাছের প্রাথমিক পরিচর্যা শুরু করেছেন। মুকুল রোগ বালাইয়ের আক্রমন থেকে রক্ষা করতে স্থানীয় কৃষি বিভাগের পরামর্শ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ঔষুধ স্প্রে করছেন তারা।
গোয়ালন্দ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. রকিবুল ইসলাম জানান, গেলো দুই সপ্তাহ থেকে গাছে আমের মুকুল আসতে শুরু করেছে। মূলত আবহাওয়াগত কারনে দেশীয় জাতের গাছে এই আগাম মুকুল দেখা যাচ্ছে। তবে এ সময় বিভিন্ন পোকামাকড় মুকুলের ক্ষতি করে।
এ পোকা দমনে বালাইনাশক স্প্রে করতে হবে। আমের মুকুল প্রস্ফুটিত হওয়ার আগে ও প্রস্ফুটিত হওয়ার পড়ে গুটি গুটি আম হলে কিটনাশক স্পে করা করতে হবে। আমের হোপার পোকা বা শোষক পোকা দমনেও নিয়মিত কিটনাশক ব্যাবহার করতে হবে। তবে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে খুব ভালো ফলন পাওয়া যাবে। একটু আগে থেকেই আমের মুকুল আসায় ঘণ কুয়াশায় ও গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিতে মুকুল ঝরে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে। অবশ্য সে প্রভাব মনে হয় আর পড়বে না।