জহুরুল ইসলাম হালিম// চরাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকা মৌ মৌ গন্ধে চারিদিক মাতোয়ারা। নজর কাঁরছে সরিষার হলুদ ফুলের সমারোহ। সরিষা ফুলের নয়নাভিরাম দৃশ্য পাল্টে দিয়েছে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার ছোট ভাকলা, দেবগ্রাম, উজানচর ও দৌলতদিয়া ইউনিয়নের ফসলের মাঠের দৃশ্যপট। শীতের শিশিরভেজা সকালে ঘন কুয়াশার চাদরে মোড়ানো মাঠ দেখে মন জুড়িয়ে যায়।
গোয়ালন্দ উপজেলার বিস্তির্ণ এলাকা জুরে এ মৌসুমে ব্যাপক সরিষার আবাদ করা হয়েছে। সরিষার সবুজ গাছের ফুলগুলো শীতের সোনাঝরা রোদে ঝলমল করছে। এ যেন এক অপরুপ সৌন্দর্য্য’র দৃশ্য। দেখে যেন মনে হচ্ছে প্রকৃতি কন্যা সেজেছে, গায়ে হলুদ বরণ সেজে। মৌমাছির গুণগুণ শব্দে ফুলের রেণু থেকে মধু সংগ্রহ আর প্রজাপতির এক ফুল থেকে আরেক ফুলে পদার্পণ এ অপরুপ প্রাকৃতিক দৃশ্য সত্যিই যেন মনোমুগ্ধকর এক মূহুর্ত। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে এমনি চিত্র দেখা যায়।
দেবগ্রামের কাউয়ালজানি এলাকার কৃষক মোক্তার আলী শেখ বলেন, সরিষা চাষে খরচ কম কিন্তু লাভটা অনেক বেশী। সরিষা ক্ষেতে সার একবারের বেশী দিতে হয় না, পরিশ্রমও অনেক কম। আমি গতবার ১ একর জমিতে সরিষার আবাদ করেছিলাম। ফলন ও লাভ বেশী হওয়ায় এবার ২একর জমিতে সরিষার চাষ করেছি। আশা করছি এবারও ভাল ফলন ও দাম পাব।
উজানচর ইউনিয়নের চর মহিদাপুর এলাকার কৃষক হাবিবুর রহমান বলেন, ধানসহ অন্যান্য খাদ্যশষ্য উৎপাদন করতে যেমন পরিশ্রম হয় তেমনি খরচও হয় অনেক। কিন্তু বাজারে ন্যায্যমূল্য পাই না। তাই অল্প সময়ে স্বল্প খরচে ও স্বল্প পরিশ্রম হওয়ায় এ অঞ্চলের কৃষকরা সরিষা চাষেই বেশী আগ্রহী হয়ে উঠছে। কাজেই সরিষাসহ বিভিন্ন কৃষিপণ্যের ক্ষেত্রে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা আরো বাড়ালে এখানকার কৃষকরা উপকৃত হতো।
এবিষয়ে গোয়ালন্দ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. রকিবুল ইসলাম জানান, এ বছর সরিষা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ১হাজার ২শ ৭০ হেক্টর জমিতে। কিন্তু গত বছর ফলন ভালো ও দাম বেশী পাওয়ায় এবার এ অঞ্চলে কৃষকরা বারি-১৪, বারি-১৭, বারি১৮ ও বিনা সরিষা-৪ এবং মাঘি সরিষা (টরি-৭)সহ নানা জাতের ১হাজার ৪শ ৬৫ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ করেছে। এ অঞ্চলে প্রতি একর জমিতে ১৫মণ পর্যন্ত সরিষার ফলন হয়। অনুকুল আবহাওয়া থাকলে এবারও সরিষার বাম্পার ফলন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আগামীতে এই অঞ্চলের ভোজ্যতেলের চাহিদা পূরণের জন্য সরিষার পাশাপাশি তিল, তিসিসহ অন্যান্য তৈলবীজ আবাদের জন্য কৃষকদের আগ্রহী করতে উদ্দ্যোগ নিয়েছে বলে জানান তিনি।