স্টাফ রিপোর্টার:
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার উজানচর ইউনিয়নে সরকারিভাবে গৃহহীনদের গৃহনির্মাণ প্রকল্পে ব্যাপক অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে।
অভিযোগগুলো ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবুল হোসেন ফকিরের বিরুদ্ধে।
সরেজমিন পরিদর্শনকালে সংশ্লিষ্টরা বলেন,এসব গৃহ নির্মাণে ব্যবহার করা হচ্ছে শত বছরের পুরাতন ইটের খোয়া, পুরাতন রড,নিম্নমানের কাঠ ও অন্যান্য সামগ্রী । সম্পূর্ণ বিনামূল্যে ঘর তৈরির কথা থাকলেও ইট, বালু, কাঠ সহ নির্মাণ সামগ্রি বাড়িতে নিতে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা দিতে হচ্ছে গৃহহীনদের। এছাড়াও ১০ জানুয়ারীর মধ্যে ঘর নির্মাণ সম্পূর্ণ করে বুঝিয়ে দেওয়ার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত অনেক বাড়িতে পৌছেনি গৃহ নির্মাণ সামগ্রী।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভূক্তভোগীরা জানায়, গোয়ালন্দের উজানচর ইউনিয়নে এ বছর ৬০টি ঘর বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। এর মধ্যে দূর্গম চর মহিদাপুর এলাকায় গৃহহীন ২৬টি পরিবার রয়েছে। এসব ঘরের নির্মাণ সামগ্রী চর মহিদাপুর এলাকায় নিতে তাদেরকে পরিবহন খরচ বাবদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যানকে দিতে হচ্ছে ১৫-২০ হাজার টাকা। যারা টাকা দিয়েছেন তাদের ঘর নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। বাকিদের মালামাল এখনো পৌছেনি। মালামাল পরিবহনের টাকা পরিশোধ না করলে তাদের ঘর বাতিল হয়ে যাবে বলেও হুমকি দেয়া হচ্ছে।
এ দিকে ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবুল হোসেন বহু বছরের পুরাতন কয়েকটি স্কুল ঘর নিলামে কিনে সেই ঘরের অতি নিম্নমানের সামগ্রী গৃহহীনদের নতুন ঘর নির্মানে ব্যবহার করছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।এর আগে ঘরের বরাদ্দ পেতে ওই এলাকার উপকারভোগীদের কাছ থেকে প্রশাসনিক খরচের কথা বলে স্হানীয় কাবলু গাজী নামের এক ব্যাক্তি ৫ হাজার টাকা করে আদায় করেছেন বলেও অনেকেই জানান।
অভিযোগের ভিত্তিতে সরেজমিন চেয়ারম্যানের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে পুরনো ইট ও ইটের খোয়া এবং পুরনো রড দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে গৃহহীনদের ঘরের ভিম ও অন্যান্য গৃহ নির্মাণ সামগ্রী। স্তুপ করে রাখা হয়েছে বহু পুরাতন ও নিম্নমানের ইট এবং রড।
এ প্রসঙ্গে চেয়ারম্যান আবুল হোসেন ফকির দাবি করেন,পুরাতন নির্মান সামগ্রীগুলো আমি ব্যবসায়ীক কাজের জন্য বাড়িতে সংরক্ষণ করে রেখেছি। ঘরের কাজে পুরাতন মালামাল ব্যবহারও করিনি। কারো কাছ থেকে কোন রুপ টাকা গ্রহণও করিনি। তবে ইতিমধ্যে যে ৬টি ঘরের মালামাল উপকারভোগীরা সেখানে নিজেরাই নিয়েছেন আমরা তাদের খরচের টাকা দিয়ে দেব।বাকি ২০ টি ঘরের মালামাল পৌঁছানো নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে।
গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আমিনুল ইসলাম বলেন, যারা ঘর পেয়েছেন তাদের কাছ থেকে কোন টাকা গ্রহণ করা যাবে না। এ ধরনের অভিযোগের কোন সত্যতাও পাওয়া যায় নি। এছাড়া পুরাতন মালামাল ব্যবহারে সংশ্লিষ্ট সকলকে নিষেধ করে দেয়া হয়েছে।