বিভিন্ন দেশে চালু হওয়া স্কুলগুলো থেকে ব্যাপক মাত্রায় সংক্রমণ ছড়ানোর খুব কমই তথ্য-প্রমাণ পেয়েছে ইউনিসেফ। তাই এ অবস্থায় ইউনিসেফ স্কুলগুলো পুনরায় খুলে দেওয়াকে অগ্রাধিকার দিতে এবং শিশুদের যথাসম্ভব নিরাপদে রাখার জন্য সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণে সব দেশের সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। মঙ্গলবার (৮ ডিসেম্বর) ইউনিসেফ এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায়।
ইউনেস্কোর সংগৃহীত তথ্য অনুসারে, গত ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী প্রতি পাঁচজন স্কুলগামী শিশুর মধ্যে প্রায় একজনের বা মোট ৩২ কোটি শিশুর ক্লাসরুম বন্ধ রয়েছে, যা গত ১ নভেম্বরের ২৩ কোটি ২০ লাখের চেয়ে প্রায় ৯ কোটি বেশি।
অন্যদিকে, অক্টোবর মাসে স্কুল বন্ধের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত শিশুর সংখ্যা প্রায় তিনগুণ কমেছে।
ইউনিসেফের শিক্ষা কার্যক্রমের বৈশ্বিক প্রধান রবার্ট জেনকিনস বলেন, কোভিড-১৯ সম্পর্কে আমরা সবকিছু শেখা সত্ত্বেও, কমিউনিটিতে সংক্রমণে স্কুলের ভূমিকা এবং স্কুলে শিশুদের সুরক্ষিত রাখতে যেসব পদক্ষেপ আমরা নিতে পারি, সেক্ষেত্রে আমরা ভুল পথে ধাবিত হচ্ছি এবং এটা বেশ দ্রুততার সঙ্গে হচ্ছে। তথ্য-প্রমাণ বলছে, স্কুলগুলো এ মহামারির প্রধান চালিকা শক্তি নয়। তা সত্ত্বেও আমরা একটি উদ্বেগজনক প্রবণতা দেখতে পাচ্ছি, যেখানে সরকার শেষ উপায় হিসেবে স্কুলগুলো বন্ধ করার পরিবর্তে শুরুতেই স্কুলগুলো বন্ধ করে দিচ্ছে। কিছু ক্ষেত্রে এটা কমিউনিটি ধরে ধরে বন্ধ করার পরিবর্তে দেশজুড়ে স্কুল বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে এবং এর ফলে অব্যাহতভাবে শিশুদের শিক্ষা গ্রহণ, মানসিক-শারীরিক সুস্থতা ও সুরক্ষার ওপর ভয়াবহ রকমের প্রভাব পড়ছে।
১৯১টি দেশ থেকে প্রাপ্ত উপাত্ত ব্যবহার করে করা সাম্প্রতিক এক বৈশ্বিক সমীক্ষায় দেখা গেছে, স্কুল খোলা বা বন্ধ— যাই থাকুক না কেন তার সঙ্গে কমিউনিটিতে কোভিড-১৯ সংক্রমণের হারের কোনো সম্পর্ক নেই। স্কুলগুলো থেকে ব্যাপক মাত্রায় সংক্রমণ ছড়ানোর খুব কমই তথ্য-প্রমাণ আছে এবং এ অবস্থায় ইউনিসেফ স্কুলগুলো পুনরায় খুলে দেওয়াকে অগ্রাধিকার দিতে এবং শিশুদের যথাসম্ভব নিরাপদে রাখার জন্য সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণে সব দেশের সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে।
স্কুল পুনরায় চালু করার পরিকল্পনার মধ্যে দূরশিক্ষণসহ শিক্ষা গ্রহণের বিস্তৃত সুযোগ অবশ্যই অন্তর্ভুক্ত করতে হবে, বিশেষ করে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য।
এছাড়া ভবিষ্যতের সংকট মোকাবিলার জন্যও শিক্ষা ব্যবস্থাকে মানানসই করে গড়ে তুলতে হবে।
স্কুলগুলো পুনরায় চালু করার জন্য ইউনেস্কো, ইউএনএইচসিআর, ডব্লিএফপি ও বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে যৌথভাবে ইউনিসেফের জারি করা কাঠামোতে জাতীয় ও স্থানীয় কর্তৃপক্ষের জন্য ব্যবহারিক পরামর্শ রয়েছে। এ নির্দেশনায় নীতিমালা সংস্কার; অর্থায়ন প্রয়োজনীয়তা; নিরাপদে কার্যক্রম পরিচালনা; ক্ষতিপূরণমূলক শিক্ষা; সুস্থতা ও সুরক্ষা এবং সবচেয়ে প্রান্তিক শিশুদের কাছে সেবা পৌঁছানোর ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।
সূত্র, বিডি প্রতিদিন।