সাহিত্যিক সৈয়দ মীর মশাররফ হোসেনের আজ জন্মদিন। ১৮৪৭ সালের ১৩ নভেম্বর কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালি উপজেলার চাঁপড়া ইউনিয়নের লাহিনীপাড়া গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা নবাব সৈয়দ মীর মোয়াজ্জেম হোসেন এবং মাতা দৌলতুন্নেছা।
তার লেখাপড়ার জীবন কাটে প্রথমে কুষ্টিয়ায়, পরে ফরিদপুরের পদমদীতে ও শেষে কৃষ্ণনগরের বিভিন্ন বিদ্যালয়ে। আঠারো বছরে বয়সে তার পিতৃবন্ধুর কন্যা আজিজুন্নেসার সাথে বিয়ে হয়। তার জীবনের অধিকাংশ সময় ব্যয় হয় ফরিদপুরের নবাব এস্টেটে চাকরি করে। তিনি কিছুকাল কলকাতায় বসবাস করেন।
সৈয়দ মীর মশাররফ হোসেন তার বহুমুখী প্রতিভার মাধ্যমে উপন্যাস, নাটক, প্রহসন, কাব্য ও প্রবন্ধ রচনা করে আধুনিক যুগে মুসলিম রচিত বাংলা সাহিত্যে সমৃদ্ধ ধারার প্রবর্তন করেন।
তিনি বাংলা ভাষার অন্যতম প্রধান গদ্যশিল্পী ও বাঙালি মুসলমান সাহিত্যিকদের পথিকৃৎ। কারবালার যুদ্ধকে উপজীব্য করে রচিত বিষাদ সিন্ধু তার সবচেয়ে জনপ্রিয় সাহিত্যকর্ম।
১৯১১ সালের ১৯ ডিসেম্বর দেলদুয়ার এস্টেটে ম্যানেজার থাকাকালে সৈয়দ মীর মশাররফ হোসেন পরলোকগমন করেন। তাকে পদমদীতে দাফন করা হয়।
তাঁর জন্মদিন উপলক্ষে রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলার নবাবপুর ইউনিয়নের পদমদী গ্রামে অবস্থিত মীর মশাররফ হােসেনের স্মৃতি কেন্দ্রে বাংলা একাডেমী, বালিয়াকান্দি উপজেলা প্রশাসন, মীর মশাররফ হােসেন সাহিত্যে
পরিষদ, মীর মশাররফ হােসেন কলেজ ও বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন কর্তৃক শ্রদ্ধা নিবেদনসহ নানা কর্মসূচীর আয়ােজন করা হয়েছে।
বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী অফিসার বেগম আম্বিয়া সুলতানা জানান, অমর কথাসাহিত্যিক মীর মশাররফ হােসেনের ১৭৩ তম জন্ম বার্ষিকী উপলক্ষে তাঁর সমাধিস্থলে উপজেলা প্রশাসন ও বাংলা একাডেমীর পক্ষ থেকে শ্রদ্ধাঞ্জলী অর্পণ ও দোয়া মাহফিলের আয়ােজন করা হয়েছে।
এছাড়াও মীর মশাররফ হােসেন ডিগ্রী কলেজ, মীর মশাররফ হােসেন সাহিত্য পরিষদসহ স্থানীয় বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক
সংগঠনগুলােও সামাজিক দূরত্ব বজায়ে রেখে দিবসটিকে ঘিরে পৃথক কর্মসূচী পালন করবে।
মশাররফ হােসেনের ১৭৩ তম জন্ম বার্ষিকী উপলক্ষে বাংলা একাডেমী তাঁর সমাধীস্থলের স্মৃতি কমপ্লেক্সে একটি পূর্ণাঙ্গ বই বিক্রয় কেন্দ্রের উদ্বোধন করার কথা ছিল। কিন্তু করােনার কারণে সেটি সম্ভব হচ্ছে না। এরই মধ্যে বাংলা একাডেমীর বেশ কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা করােনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
যার কারণে এ বছর শুধুমাত্র শ্রদ্ধাঞ্জলী অর্পণ ও দোয়া মাহফিলের মধ্য দিয়ে সীমিত পরিসরে তাঁর জন্ম বার্ষিকী উদযাপন করা হবে।