করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বিশিষ্ট চলচ্চিত্র অভিনেতা সাদেক বাচ্চু মারা গেছেন। আজ সোমবার দুপুর ১২টা ৫ মিনিটে মহাখালীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন এই অভিনেতা (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৫ বছর।
সোমবার সকাল থেকেই তার হার্টবিট বন্ধ হয়েছে বেশ কয়েকবার। অবশেষে ১২টা ৫ মিনিটে সাদেক বাচ্চু মৃত্যুবরণ করেছেন বলে নিশ্চিত করা হলো।
সম্প্রতি জ্বরে আক্রান্ত হন সাদেক বাচ্চু। পরে তার শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে গেল ৬ সেপ্টেম্বর তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। গত শনিবার (১২ সেপ্টেম্বর) তার পরিবার সূত্রে জানা যায় এ অভিনেতা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।
এরপর শ্বাসকষ্ট বেড়ে গিয়ে সাদেক বাচ্চুর শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটায় শনিবার রাতে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে ইউনিভার্সেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে হাসপাতালটির কোভিড ইউনিটের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) ছিলেন এই অভিনেতা। তার শরীরের আর উন্নতি হয়নি। রোববার থেকেই তার হার্ট ও ফুসফুস ৮৫ শতাংশ অকেজো ছিলো। আজ সোমবার সকাল থেকেই কয়েকদফায় তার হার্টবিট বন্ধ হয়ে আবার চালু হয়েছে। ভেন্টিলেটরে থাকা অবস্থাতেই অবশেষে চলে গেলেন আজ না ফেরার দেশে।
ডাকবিভাগের সাবেক কর্মকর্তা সাদেক হোসেন বাচ্চু ১৯৮৫ সাল চলচ্চিত্র জগতে পা রাখেন। ‘রামের সুমতি’র মাধ্যমে যাত্রা শুরুর পর বহু জনপ্রিয় চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন তিনি।
৫০ বছরেরও বেশি সময়ের অভিনয় ক্যারিয়ার তার। শুরুতে মঞ্চ নাটকে অভিনয় করতেন। মতিঝিল থিয়েটারের প্রতিষ্ঠাতা তিনি। এ দলের সভাপতিও ছিলেন। বেতারে একটা সময়ে অসংখ্য নাটক করেছেন। বেতারের খেলাঘর তার আলোচিত একটি নাটক।
টেলিভিশন নাটকে প্রথম অভিনয় করেন ১৯৭৪ সালে। নাটকটির নাম ছিল- প্রথম অঙ্গীকার। প্রথম সিনেমায় অভিনয় করেন আশির দশকে। সিনেমাটির নাম- রামের সুমতি। পরিচালনা করেন শহিদুল আমিন।
বহুমাত্রিক এ অভিনেতার উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রের মধ্যে রয়েছে- জোর করে ভালোবাসা হয় না (২০১৩), জজ ব্যারিস্টার পুলিশ কমিশনার (২০১৩), জীবন নদীর তীরে (২০১৩), তোমার মাঝে আমি (২০১৩), ঢাকা টু বোম্বে (২০১৩), ভালোবাসা জিন্দাবাদ (২০১৩), এক জবান (২০১০), আমার স্বপ্ন আমার সংসার (২০১০), মন বসে না পড়ার টেবিলে (২০০৯), বধূবরণ (২০০৮), ময়দান (২০০৭), আমার প্রাণের স্বামী (২০০৭), আনন্দ অশ্রু (১৯৯৭), প্রিয়জন (১৯৯৬), সুজন সখি (১৯৯৪)।
১৯৫৫ সালের ১ জানুয়ারি চাঁদপুরে জন্মগ্রহণ করেন গুণী এ অভিনেতা। অভিনয় ছাড়াও দীর্ঘ দিন তিনি বাংলাদেশ ডাক বিভাগে চাকরি করেছেন। ‘একটি সিনেমার গল্প’ সিনেমায় অভিনয় করে খল অভিনেতা হিসেবে তিনি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান।