গত সোমবার দেবগ্রাম ইউনিয়নের কাওয়ালজানি এলাকার পদ্মার পাড় থেকে উদ্ধার হওয়া দুই হাত বিচ্ছিন্ন পুঁতে রাখা অর্ধগলিত লাশের পরিচয় শনাক্ত হয়েছে। লাশটি গত ২৭ তারিখ নিখোঁজ হওয়া মোঃসুজন খান মিরাজের। সে দৌলতদিয়া মডেল হাই স্কুলের নবম শ্রেণির মানবিক বিভাগের ছাত্র।
গত সোমবার দশটার দিকে স্থানীয় কিছু লোকজন নদীর পাড় দিয়ে যাওয়ার সময় কলাগাছ দিয়ে ঢেকে রাখা একটি লাশ দেখতে পায়। এসময় তারা চেয়ারম্যান হাফিজুল ইসলাম কে বিষয়টি জানান এবং হাফিজুল ইসলাম পুলিশকে অবহিত করলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশটি উদ্ধার করেন। তৎক্ষনাৎ লাশ টির পরিচয় সনাক্ত না হাওয়ায় পুলিশ সন্ধ্যায় অজ্ঞাত হিসেবে ময়না তদন্তের জন্য রাজবাড়ী মর্গে পাঠান। রাতেই তার বাবা থানায় গিয়ে দাবি করেন এটাই মিরাজের লাশ এবং ময়নাতদন্ত শেষে মঙ্গলবার বিকেলে লাশ বাড়িতে এনে সন্ধ্যার আগেই চৌধুরীপাড়া কবরস্থানে দাফন করে।
মিরাজের নিকট আত্মীয় দেবগ্রাম ইউপির ৯নম্বর ওয়ার্ড সদস্য আব্দুস সালাম জানান, গত বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে বাড়িতে খাবার খাচ্ছিল মিরাজ। মুঠোফোনে ফোন পেয়ে মা-বাবা বাড়িতে না থাকায় ছোট বোনকে বলে বাড়ি থেকে বের হয়। এর ২০ মিনিট পর থেকে মিরাজের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। পরেরদিন শুক্রবার মিরাজের বাবা সিরাজ খান গোয়ালন্দ ঘাট থানায় একটি নিখোঁজ সংক্রান্ত সাধারণ ডায়রী করেন।
তিনি আরো বলেন, সোমবার সকালে স্থানীয় লোকজন নদীর পাড় দিয়ে যাওয়ার সময় উপুর করে কাঁদাপানিতে গেড়ে রাখা লাশ দেখে পুলিশে খবর দেয়। লাশ উত্তোলনের পর লাশ দেখে সনাক্ত করা কষ্ট হলেও লাশের কপালে থাকা কাটা দাগ, পড়নের হাফ প্যান্ট ও বয়স দেখে মিরাজের লাশ হিসেবে শনাক্ত করি। পরিবারের চার ভাই ও এক বোনের মধ্যে মিরাজ সবার ছোট।
দেবগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাফিজুল ইসলাম রাজবাড়ী টেলিগ্রাফ কে বলেন লাশের চেহারা কিছুটা বিকৃত হলেও চোখের উপরের কাটা দাগ ও হাফপ্যান্ট দেখে নিশ্চিত হওয়া যায় এটা মিরাজের লাশ।
গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি তদন্ত আব্দুল্লাহ আল-তায়াবীর বলেন, উদ্ধার হওয়া দুই হাত বিচ্ছিন্ন তরুণের পরিচয় নিশ্চিত না হওয়ায় সোমবার সন্ধ্যায় অজ্ঞাত হিসেবে ময়না তদন্তের জন্য পাঠায়। তবে পরিবারের লোক মিরাজের লাশ দাবী করে রাতেই তার বাবা বাদী হয়ে অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। হত্যাকান্ডের প্রকৃত কারণ উদঘাটনের জন্য পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে।
ফিরোজ আহমেদ/গোয়ালন্দ