ইন্দোনেশিয়ার পূর্বালিঙ্গা অঞ্চলের ছোট্ট গ্রাম সেরাং। এই গ্রামের বাসিন্দা ৪২ বছর বয়সী রিদওয়ান সুরুরি শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে নিয়েছেন অভিনব উদ্যোগ। নিজের পোষা ঘোড়া লুনার মাধ্যমে বানিয়েছেন একটি ভ্রাম্যমাণ পাঠাগার। আর এভাবেই নিজের গ্রামসহ আশপাশের গ্রামে শিক্ষার আলো ছড়াচ্ছেন তিনি। বিবিসি অনলাইন এ খবর প্রকাশ করেছে।
বিবিসির খবরে বলা হয়, এ বছরের জানুয়ারিতে ভ্রাম্যমাণ পাঠাগারটি চালু করেন রিদওয়ান। নাম রাখেন কুদাপুসটাকা; যার অর্থ ঘোড়ার পাঠাগার। সপ্তাহের মঙ্গল, বুধ ও বৃহস্পতি এই তিন দিন তিনি বিভিন্ন গ্রামের বিদ্যালয়গুলোতে হাজির হন ভ্রাম্যমাণ পাঠাগার নিয়ে। কখনো কখনো তার সঙ্গে থাকে মেয়ে ইন্দ্রিয়ানি ফাতমাওয়াতি। রিদওয়ান তার পোষা ঘোড়া লুনার পিঠে ছোট একটি বাক্স বেঁধে দেন। ওই বাক্সে থাকে বই। তারপর এগুলো নিয়ে হাজির হন বিদ্যালয়ে বিদ্যালয়ে। তার আগমনের খবর পেয়ে শিক্ষার্থীরা তার কাছে এসে পছন্দের বই নিয়ে যায়। এ জন্য তাদের কোনো অর্থ দিতে হয় না। রিদওয়ান জানান, বই পড়তে দেয়ার বিনিময়ে অর্থ আদায়ের কোনো পরিকল্পনা তার নেই। তিনি বলেন, আমি ঘোড়া ভালোবাসি। তাই চাচ্ছিলাম, এই শখকে কোনোভাবে কাজে লাগিয়ে মানুষের উপকার করতে। বিবিসি ইন্দোনেশিয়াকে তিনি আরো বলেন, এই ভ্রাম্যমাণ পাঠাগার করার বুদ্ধিটি পেয়েছি আমার ঘোড়াপ্রেমী বন্ধু নিরওয়ান আরসুকার কাছ থেকে। প্রস্তাব পছন্দ হওয়ায় মাঠে নেমে পড়ি। শুরুতে আমার কাছে বই ছিল না। ওই বন্ধুই আমার কাছে বাক্সভর্তি বই পাঠিয়েছিল।
যেই লুনাকে নিয়ে নিজের শখ পূরণ করতে পারছেন রিদওয়ান; সেই ঘোড়াকে নিয়ে তিনি বললেন, এটা ছিল বন্য ঘোড়া। ধীরে ধীরে পোষ মানিয়েছি। লুনা কখনো কাউকে আঘাত করেনি। শিশুদের আশপাশে থাকলে সে বেশ বন্ধুবৎসল থাকে। ঘোড়ার পাঠশালা নিয়ে নিজের স্বপ্ন সম্পর্কে রিদওয়ান বলেন, বাচ্চারা কমিকস ও গল্পের বই পড়তে পছন্দ করে। আর বড়রা পছন্দ করেন নিত্যদিনের দরকারি বিষয়-সম্পর্কিত বই পড়তে। তিনি স্বপ্ন দেখেন, তার বাড়ির সামনে একটি ছোট্ট পাঠাগার হবে; সেখানে সবাই বই পড়তে আসবে।