শিরোনামের উক্তিটি একজন তরুণী রাজবাড়ী জেলার পুলিশ সুপার মিজানুর রহমানকে উদ্দেশ্যে করে বলেছেন। এর পিছনে রয়েছে একটি বিশাল গল্প। যে গল্পের শেষটা এমন না হলেও পারতো।শেষটা আর দশটা ছিনতাইয়ের ঘটনার মতো হলেও হতে পারতো হয়তোবা।কিন্তু যেখানে পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান সেখানে গল্পের শেষটা এমনটাই হবে, সেটা ধারণাই করা যায়।
গল্পের শুরুটা ছিল ৮ই আগস্ট।একজন তরুণী যশোর থেকে বাসে করে চট্টগ্রাম যাচ্ছিলেন। যাত্রাপথে দৌলতদিয়া ফেরি ঘাটে এসে তার বাসটি যানজটে পড়ে। দৌলতদিয়া ঘাটের প্রায় দুই কিলোমিটার আগে থেকে পাশের জানালা দিয়ে তার মোবাইলটি এক জন ছিনতাইকারী ছিনিয়ে নিয়ে যায়। তিনি তৎক্ষণাৎ কিছুটা কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়েন।বাসায় গিয়ে অনেক ভাবনা চিন্তা করে তিনি সিদ্ধান্ত নেন বিষয়টা তিনি রাজবাড়ী জেলা পুলিশকে জানাবেন। সেই মোতাবেক তিনি রাজবাড়ী জেলা পুলিশ সুপারের নাম্বার টি সংগ্রহ করেন।ফোনটি তৎক্ষণাৎ ভাবে পুলিশ সুপার রিসিভ না করলেও পরবর্তীতে তিনি ফোন করেন এবং তরুনীর কাছ থেকে সম্পূর্ণ ঘটনাটি শোনেন।
এরপর যা ঘটেছে তা তরুণী তার সামাজিক যোগাযোগ একটি পোষ্টের মাধ্যমে জানিয়েছেন। তরুনীর পোস্টটি হুবহু তুলে ধরা হলো – “একজন জনগণের বন্ধুর গল্প। সৃষ্টিকর্তার সৃষ্ট অতি ক্ষুদ্রকায় মানুষের মধ্যে কিছু এমন মানুষও আছেন,যারা এক পৃথিবী বিশাল সমান হৃদয় বুকে নিয়ে ঘুরে বেড়ান চুপিসারে,খুব সৌভাগ্যক্রমে দেখা পাওয়া যায় এমন মানুষের।
এমন সৌভাগ্য আজ আমার হয়েছে, রাজবাড়ী জেলা পুলিশের এসপি মিজানুর রহমান স্যারের দেখা পেয়ে।
বিগত ৮ তারিখ যশোর থেকে চিটাগাং যাওয়ার পথে রাতে দৌলতদিয়া ঘাটের দেড় থেকে দুই কিলোমিটার পেছনে বাসের জানালা থেকে আমার মোবাইল ফোনটি ছিনতাই হয়ে যায়। একদিকে স্কুলে অনলাইনে ক্লাস অব্যাহত করা নিয়ে দুশ্চিন্তা অন্যদিকে ফোন,এরপর অনেকটাই হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলাম ফোনটি হয়ত আর কোনভাবেই পাবো না ভেবে।পরবর্তীতে যশোরে ফিরে ফেসবুকে রাজবাড়ী সংক্রান্ত বিভিন্ন পোষ্ট ঘাটতে গিয়ে হঠাৎ রাজবাড়ী থানার এসপি মিজানুর রহমান স্যারের নানামুখী জনসেবামূলক ও দায়িত্বশীল কর্মকান্ডের অনেক পোস্ট দেখে অনেকটা আশাবাদী হয়ে সাহস করে স্যারের contact number যোগাড় করে স্যারকে ফোন দিই।প্রথম কয়েকবার ফোন বেজে কেটে গেলেও পরবর্তীতে স্যার নিজেই call back করে টানা ৭ মিনিট ধৈর্য্য নিয়ে আমার সব কথা মনোযোগ দিয়ে শোনেন এবং আমাকে কিছুটা আশ্বস্ত করেন। ফোন পাবো কি পাবো না তখনও জানতাম না তবে স্যারের ব্যবহারে অনেক মুগ্ধ হয়েছিলাম। পরবর্তীতে পরদিন দুপুরে স্যারের নির্দেশনায় একজন সাব-ইনস্পেক্টার ফোন দিয়ে বিস্তারিত জানতে চান এবং ঘন্টাখানেক পর আমার ফোন এবং ছিনতাইকারীদের চেহারার আরো বিবরণ জেনে নিলেন। অতঃপর অনেক আশা নিয়ে অপেক্ষা এবং অপেক্ষা এবং আরও ঘন্টাখানেক পর অবশেষে কর্তব্যরত SI রাত ১০ টার দিকে কল দিয়ে একটা whatsapp number চাইলেন এবং আমার ফোনের imo number মিলিয়ে নিয়ে ভিডিও call এ একটা ফোন দেখতে বললেন,,,& yes at last that was my phone.পরে SP স্যারের কথা বলে আজকে একদম সকালে রওনা দিলাম রাজবাড়ীর উদ্দেশ্যে। অনেক ব্যাস্ততার মাঝেও স্যার আমাদেরকে অনেকটা সময় দিলেন কথা বললেন এবং আমার হাতে আমার ছিনতাই হওয়া ফোনটি ফেরত দিলেন। And I was just felt like Eid Mobarak
স্যার প্রমাণ করেছেন, সত্যিই পুলিশ জনগণের বন্ধু।
এখনও পৃথিবীতে এমন অনেক মিজানুর রহমান স্যার সত্যিই আছেন,নয়ত পৃথিবী এতদিনে হয়ত ধ্বংস হয়ে যেত। স্যারকে ধন্যবাদ দেয়ার ভাষা আমার নেই,এই ধন্যবাদ,এই কৃতজ্ঞতা ব্যাক্ত করে শেষ করার মতো না। আল্লাহ স্যারকে দীর্ঘজীবি করুন হাজার হাজার বছর বেঁচে থাক এই মানুষগুলো পৃথিবীর কল্যাণে।”
তরুণীর এই পোষ্টটি রাজবাড়ীর পুলিশ সুপার মিজানুর রহমানের ফেসবুক ওয়াল থেকে নেওয়া।