সাইফুল ইসলাম, মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি, ২৭ নভেম্বর
মানিকগঞ্জে পতিতাবৃত্তি পরিচালনা ও সহায়তার অভিযোগে মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে মামলা দায়ের হওয়ার পর দুই সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও এখনো ধরা-ছোয়ার বাইরে রয়েছে মূল হোতারা।
জানা গেছে, গত ৯ নভেম্বর মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড এলাকায় আবাসিক হোটেলে অসামাজিক কার্যলাপে লিপ্ত থাকা আপত্তিকর অবস্থায় ১৮ নারী-পুরুষকে আটক করে মানিকগঞ্জ সদর থানা পুলিশ। এঘটনায় আবাসিক হোটেলের মালিকদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন বয়সী মেয়েদের ফুসলিয়ে ও প্রলোভন দেখিয়ে পতিতাবৃত্তি করানোর অভিযোগে মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে ১১ নভেম্বর মানিকগঞ্জ সদর থানায় মামলা দায়ের করেন সদর থানার উপ-পরিদর্শক মো: বাবুল মিয়া।
মামলা দায়ের হওয়ার দিনই অভিযান চালিয়ে আবাসিক হোটেলের দুইজন মালিক দেলোয়ার হোসেন ও রিপন হোসেনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
আটককৃত আসামীরা পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে পলাতক আসামীদের সহযোগিতায় দীর্ঘদিন যাবৎ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের নানা বয়সী মেয়েদের ফুসলিয়ে ও প্রলোভন দেখিয়ে পতিতাবৃত্তি করানোর অভিযোগ স্বীকার করেন। এদিকে, মামলার বাকি চার আসামী হালিম ভান্ডারী, মো: হানিফ মিয়া, আরজু মিয়া ও আমির হোসেনকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। পলাতক আসামীদের মোবাইল সচল থাকলেও তাদের অবস্থান জানতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি পুলিশকে। অভিযোগ রয়েছে নিজেদের গ্রেফতার হওয়া ঠেকাতে পুলিশকে মোটা অঙ্কের অর্থ উৎকোচ দিয়েছে ওই চার আসামী।
আসামীদের মোবাইল ফোনে কল দিয়ে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তারা বলেন, পুলিশের সাথে কথা হয়েছে। আমরা জামিন নেওয়ার চেষ্টা করছি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড এলাকার একতা টাওয়ারের সাত তালায় অবস্থিত পদ্মা আবাসিক হোটেল এবং ৬ তালায় রয়েল ফ্রেশ নামের আরেক হোটেলে দীর্ঘ দিন ধরেই অসামাজিক কার্যকলাপ পরিচালনা করতো আসামীরা। ওই হোটেলে তরুন-তরুনীসহ বিভিন্ন বয়েসি নারী পুরুষ এসে অসামাজিক কাজ করতো। অল্প কিছু সময়ের জন্য হোটেলের ভাড়া গুনতে হতো ১০০০ টাকা। বাইরে থেকে আসা নারী-পুরুষ ছাড়াও ওই হোটেলে অনকলে কিছু পতিতাও ভাড়া দেয়া হতো।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, প্রতিনিয়তই ওই হোটেলটিতে বিভিন্ন বয়েসি নারী-পুরুষের আনাগোনা ছিল। মূলত অসামাজিক কার্যকলাপ সম্পন্ন করতেই তারা এখানে আসতো।
এ বিষয়ে মামলার বাদি মানিকগঞ্জ সদর থানার উপ-পরিদর্শক মো: বাবুল মিয়া বলেন, আমি মামলা দায়ের করেছি। আসামীদের গ্রেফতারের বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাই ভালো বলতে পারবেন। তার যেটা ভালো মনে হয় তিনি সেটাই করবেন।
মানিকগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুর রউফ সরকার বলেন, মামলার তদন্ত চলছে এবং পলাতক আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। পুলিশের উৎকোচ গ্রহণের বিষয়ে তিনি বলেন, আসামীরা নানা ধরনের গুজব ছড়াতে পারে, এর কোন ভিত্তি নেই।