রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে এনে ফরিদপুরের এক নারী (২৩) কে গণধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে ওই নারী ৪জনকে আসামী করে গোয়ালন্দঘাট থানায় মামলা করেছে।
মামলা ও অন্যান্য সূত্রে জানা গেছে, ধর্ষণের শিকার নারীর বাড়ী ফরিদপুর জেলার কোতয়ালী থানাধীন গুহলক্ষ্মীপুর এলাকায়। স্বামীর সাথে ছাড়াছাড়ি হয়ে হওয়ার পর সে বিদেশে যাওয়ার চেষ্টা করতে থাকে। বিষয়টি জানতে পেরে একই থানাধীন (ফরিদপুরের কোতয়ালী) দুর্গাপুর ডাবল ব্রীজ এলাকার রিপন (৩৩), গোপালপুর এলাকার সাগর সরকার ওরফে উৎপল (৩৬), দুর্গাপুর ঢলু মাতুব্বর পাড়া এলাকার মনজু শেখ (৪৭) ও চাঁদপুর মৈজদ্দিন মাতুব্বর পাড়া এলাকার রুবেল শিকদার (৩০) তাকে প্রস্তাব দেয় যে, তাদেরকে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা দিলে তারা ৩ মাসের মধ্যে তাকে গৃহিনী ভিসা দিয়ে সৌদি আরবে পাঠিয়ে দিতে পারে। এতে ওই নারী রাজী হয়ে গত অক্টোবর মাসে তাদেরকে ৫০ হাজার টাকা দেয়। বাকী টাকা সৌদি আরবের ভিসা পাওয়ার পর দেয়ার কথা থাকে। পরে অভিযুক্তরা তাকে ৭ দিনের ট্রেনিংয়ের জন্য ঢাকা যেতে হবে বলে উল্লেখ করে। সে মোতাবেক গত ২৫শে অক্টোবর বিকালে অভিযুক্তরা ওই নারীকে নিয়ে ঢাকায় যাওয়ার কথা বলে ফরিদপুর থেকে ২টি মোটর সাইকেলযোগে রওনা হয়। তার বাড়ি থেকে আঞ্চলিক সড়ক দিয়ে দৌলতদিয়া ঘাট হয়ে ঢাকা যাওয়ার পথে রাত ৮টার দিকে গোয়ালন্দ উপজেলার উজানচর ইউনিয়নের অন্তর্গত নলিয়াপাড়া পাকা রাস্তার মোড় এলাকায় পৌঁছে অভিযুক্তরা ওই নারীকে সড়কের পাশের একটি বাগানে নিয়ে যায়।
এরপর তাদের কাছে লুকিয়ে রাখা ধারালো চাকুর ভয় দেখিয়ে বাগানের ভিতর রাতভর পালাক্রমে ধর্ষণ করে। শেষ রাতের দিকে তাকে বাগানের গাছের সাথে বেধে রেখে তারা পালিয়ে যায়। ভোরে ওই নারী বাগান থেকে বের হয়ে বিধ্বস্ত অবস্থায় স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতা ও মসজিদের ইমামের কাছে ঘটনা খুলে বলে। পরে তাদের পরামর্শে সে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ্য হয়ে অভিযুক্ত ৪ জনকে আসামী করে গোয়ালন্দ ঘাট থানায় মামলা দায়ের করে। মামলা নং-৪১, তারিখ-৩০/১০/২০২২ ইং, ধারা-নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯(১)/৩০। অভিযুক্তরা পলাতক থাকায় তাদের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
উজানচর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ইউপি সদস্য আবুল কালাম আজাদ বলেন, ঘটনার দিন ভোরে তিনি স্থানীয় মসজিদে ফজরের নামাজ পড়ে বাড়ীতে ফিরছিলেন। এ সময় ওই নারী তাদের কাছে ধর্ষণের শিকার হওয়ার কথা জানালে তারা তাকে হাসপাতালে চিকিৎসা ও মামলা করার পরামর্শ দেন।
এ ব্যাপারে গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি স্বপন কুমার মজুমদার জানান, ভুক্তভোগীর মামলাটি থানায় রেকর্ড করা হয়েছে। অভিযুক্ত আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।