সাইফুল ইসলাম, মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি, ২৩ অক্টোবর
মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নে জেলে কার্ডের চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। চাল বিতরণের সময় জেলেদের কাছ থেকে পরিবহন খরচের নামে প্রতি জনের কাছ থেকে ২০ টাকা আদায়ের অভিযোগ করেন জেলেরা।
জানা গেছে, ইলিশের প্রজনন মৌসুম নির্বিঘ্ন করতে ৭ থেকে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত দেশের নদ-নদী ও বঙ্গোপসাগরে ইলিশ ধরায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে সরকার। নিষেধাজ্ঞার এই সময়ে কার্ডধারী প্রতিজন জেলের জন্য ভিজিএফের ২৫ কেজি চাল বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। জেলেদের মাঝে ভিজিএফের এই চাল দেওয়ার সময় জেলেদের কাছ থেকে অবৈধভাবে ২০ টাকা করে আদায় করছে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, সচীবসহ ইউপি সদস্যরা।
রবিবার (২৩ অক্টোবর) দুপুরে সরেজমিনে উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নে গিয়ে দেখা যায়, ইউনিয়নের ২৫০ জন জেলের প্রত্যেককে ২৫ কেজি করে ভিজিএফের চাল বিতরণ করছে পরিষদের সচিব ও ইউপি সদস্যরা। পরিষদের গোডাউন থেকে চাল বের করে দেওয়ার সময় ইউপি সচীব ও ইউপি সদস্যদের সামনেই প্রত্যেকজন জেলের কাছ থেকে ২০ টাকা করে আদায় করছে কৃষ্ণ সরকার নামের এক ব্যক্তি। এ নিয়ে জেলেরা ক্ষোভ প্রকাশ করলেও তার তোয়াক্কা করছে না ইউনিয়ন পরিষদ সংশ্লিষ্টরা।
জেলেদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হচ্ছে কেন জানতে চাইলে কৃষ্ণ সরকার বলেন, উপজেলা থেকে ইউনিয়ন পরিষদে চাল আনতে যে খরচ হয় সেই খরচ বাবদ জেলেদের কাছ থেকে ২০ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে।
ক্ষোভ প্রকাশ করে ইশাখাবাদ গ্রামের জেলে রবীন্দ্র সরকার বলেন, নদীতে এখন মাছ ধরা নিষেধ। আমরা অনেক কষ্টে দিনাতিপাত করছি। সরকার আমাদের জন্য বিনামূল্যে চাল দিয়েছে। কিন্ত চাল নেওয়ার সময় টাকা না দিলে পরিষদের লোকজন আমাদের চাল দেয়না।
আরেক জেলে নিতাই রাজবংশীর স্ত্রী বলেন, আমি বলেছিলাম আমার কাছে টাকা নেই, উত্তরে তারা আমাকে বলেছে টাকা না দিতে পারলে চাল রেখে যাও। পরে একজনের কাছ থেকে টাকা ধার নিয়ে দিয়েছি।
জেলেদের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার বিষয়ে রামকৃষ্ণপুর ইউপি চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা কামাল হোসেনের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি একটা জরুরী কাজে বাইরে আছি। আমি পরিষদের লোকজনকে ক্যারিং খরচ বাবদ ১০ টাকা করে নেওয়ার কথা বলে এসেছি। আমি চলে আসার পর ২০ টাকা করে নিচ্ছে। ওরা কাজটা ঠিক করেনি। এ নিয়ে নিউজ করার দরকার নেই, আপনি আমার সাথে একটু দেখা কইরেন।
বিষয়টি হরিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: সাইফুল ইসলামকে মুঠোফোনে জানালে তিনি বলেন, জেলেদের কাছ থেকে একটি টাকাও নেওয়ার সুযোগ নেই। আমি এখনই মৎস কর্মকর্তাকে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলছি।
তবে রবিবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে এ প্রতিবেদনটি লেখা পর্যন্ত হরিরামপুর উপজেলা মৎস কর্মকর্তা সাইফুল ইসলামকে কোন ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি।