কুমারখালীতে সড়ক জুড়ে চলছে অবৈধ পশুহাট, মহা সড়কে চলাচলে ভোগান্তি

নিউজ ডেস্ক | রাজবাড়ী টেলিগ্রাফ / ১৯৬ বার পড়া হয়েছে
সর্বশেষ আপডেট : বুধবার, ১২ অক্টোবর, ২০২২

0Shares

কুমারখালী প্রতিনিধি।

প্রশাসনের নির্দেশ অমান্য করেই চলছে
কুষ্টিয়ার কুমারখালীর নন্দনালপুর ইউনিয়নের আলাউদ্দিন নগর অস্থায়ী পশুহাট। কুষ্টিয়া – রাজবাড়ী আঞ্চলিক মহাসড়কের একাংশ জুড়ে বুধবার দিনব্যাপী চলে এই পশুহাট। রশিদ প্রদানের মাধ্যমে ৫০ – ১০০ টাকা করে খাজনা আদায় করেছেন হাট কর্তৃপক্ষ।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের নির্দেশেই চলেছে এই অবৈধ অস্থায়ী পশুহাট। তবে হাট চলার বিষয়ে কিছুই জানেনা উপজেলা প্রশাসন। অবৈধভাবে হাট চলায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অন্যান্য হাট কমিটির সদস্যরা।

অপরদিকে মহাসড়কের একাংশ জুড়ে হাটের কর্ম পরিচালিত হচ্ছে। এতে সড়কে সৃষ্টি হচ্ছে যানযট। ভোগান্তি নিয়ে চলাচল করছেন মানুষ।

বিকেল সাড়ে ৪ টার দিকে সরেজমিন দেখা গেছে, কুষ্টিয়া – রাজবাড়ী সড়কের আলাউদ্দিন নগর এলাকার ফাঁকা মাঠে বসেছে গরুর হাট। পশু আনা নেওয়ার পরিবহন গুলো রাখা হয়েছে সড়কের উত্তরপাশের একাংশ জুড়ে। এতে সৃষ্টি হচ্ছে যানযট। ভোগান্তি নিয়ে চলাচল করছে মানুষ।

হাটের ভিতরে গিয়ে দেখা গেছে, হাটে প্রচুর পশু ও লোক সমাগম। চলছে বেচাকেনাও। অস্থায়ী পশুহাটের রশিদ প্রদানের মাধ্যমে চলছে বেচাকেনা। পশুপ্রতি ৫০ -১০০ টাকা করে খাজনা আদায় করা হচ্ছে। হাটের ভিতরে নন্দনালপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানকে ঘুরাফেরা করতে দেখা গেছে।

জানা গেছে, প্রায় ২০ বছর ধরে রেলওয়ের প্রায় এক একর জমি কৃষিকাজে ব্যবহারের কথা বলে চলছে আলাউদ্দিন নগর পশুহাট। গত বছর এই ঐতিহ্যবাহী এই হাটটি প্রায় ৮০ লক্ষ টাকা ইজারা হয়। কিন্তু রেলের জমিতে কৃষিকাজের পরিবর্তে পশুহাট বসানোর জন্য গত ১৩ সেপ্টেম্বর হাটটি বন্ধ করে দেন রেল কর্তৃপক্ষ। গত ৩ অক্টোরব ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের মাধ্যমে নতুন স্থানে হাট বসানোর জন্য প্রশাসনের নিকট আবেদন করা হয়েছে।

আরো জানা গেছে, প্রশাসন হাটের অনুমতি না দিলেও বুধবার দিনব্যাপী চলেছে এই পশুহাট। বেচাকেনার রশিদ প্রদানের মাধ্যমে খাজনা আদায় করা হয়েছে। এদিন প্রায় পাঁচ শতাধিক পশু কেনাবেচা হয়েছে। গত বুধধবারও হাট বসেছিল। দুপুরে উপজেলা প্রশাসন হাটটি ভেঙে দেয়।

এবিষয়ে হাটের একজন খাজনা আদায়কারী নাজমুল বলেন, ‘ চেয়ারম্যান সাহেবের নির্দেশেই হাট চালানো হচ্ছে। চেয়ারম্যান সাহেব ভিতরে আছে। পরিচালনাকারীদের খাওয়ার খরচ মেটানোর জন্য নাম মাত্র খাজনা নেওয়া হচ্ছে। কেউ ৫০ টাকা দিচ্ছেন, কেউ ১০০ টাকা দিচ্ছেন।

খোকসা উপজেলা থেকে হাটে আসা লিটন ব্যাপারী বলেন, ‘ ১৭ টি গরুর মধ্যে ৮ টি গরু বিক্রি করেছি। কোনো খাজনা লাগেনি।’

নন্দনালপুর ইউনিয়নের সোন্দাহ গ্রামের কৃষক আতিয়ার বলেন, ‘ ৪৬ হাজার টাকা দিয়ে একটি গরু কিনেছি। ১০০ টাকা খাজনা দিয়ে রশিদ নিয়েছি।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক পথচারীরা বলেন, ‘ সড়কের অর্ধেক জুড়ে রাখা হয়েছে হাটের যানবহন। এতে যানযট সৃষ্টি হচ্ছে। চলাচল করতে ভোগান্তি হচ্ছে। যেকোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। সড়কের ওপর থেকে যানবাহন গুলো অপসারণ করা দরকার।’

এবিষয়ে আলাউদ্দিন নগর সাপ্তাহিক পশুহাটের সভাপতি মো. হামিনুর রহমান বলেন, ‘ হাটের এখনো অনুমতি পাইনি। হাট বসেছে, বেচাকেনাও হয়েছে। কিন্তু খাজনা নেওয়া হয়নি। চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলেন। আশা করছি অল্পদিনের মধ্যেই অনুমতি পেয়ে যাব।’

হাটে সাংবাদিকদের দেখে সটকে পড়েন নন্দলালপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান খোকন। এবিষয়ে জানতে চেয়ারম্যান সাহেবের মুঠোফোনে কল দেওয়া হলে তিনি কলটি রিসিভ করেননি।

কুমারখালী পৌরসভার ৫ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও কুমারখালী সপ্তাহিক হাট কমিটির সদস্য এস এম রফিক বলেন, ‘ বুধবারে আমাদের হাট চলত। অনুমতি না থাকায় তা বন্ধ রয়েছে। কিন্তু প্রশাসনের চোখের সামনে আলাউদ্দিন নগরের অবৈধ পশুহাটটি কিভাবে চলছে?

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ শাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘ হাট লাগানোর জন্য হাট কর্তৃপক্ষ আবেদন করেছেন। কিন্তু অনুমতি হয়নি। এখন হাট লাগানো হলে তা অবৈধ। (বুধবার) হাট লাগানোর বিষয়টি কেউ জানায়নি। তবে গতহাটটি ভেঙে দেওয়া হয়েছিল।

Facebook Comments


এ জাতীয় আরো খবর
NayaTest.jpg