গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) প্রতিনিধি
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে রাজনৈতিক বিরোধকে কেন্দ্র করে ঈদের আগের দিন রাতে উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আবির হোসেন রিদয়ের ব্যক্তিগত কার্যালয়ে হামলা ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি ভাঙচুরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনার বিচার দাবী করে উপজেলা ছাত্রলীগ দলীয় কার্যালয়ে আজ বুধবার সকাল ১০টায় সংবাদ সম্মেলন আহবান করে। পাশাপাশি পৌর ছাত্রলীগ পাল্টা কর্মসূচি হিসেবে মামলা প্রত্যাহারের দাবীতে বুধবার সকাল ১০টায় গোয়ালন্দ বাসষ্ট্যান্ড এলাকায় মানববন্ধন কর্মসূচি আহবান করে। উজানচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গোলজার হোসেন মৃধার ছেলে উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আবির হোসেন রিদয় জানান, ঈদের আগের দিন গোয়ালন্দ বাজারে নিজস্ব হৃদয় সুপার মার্কেটের দ্বিতীয় তলায় ব্যক্তিগত কার্যালয়ে রাত ৯টার দিকে পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি রাতুল আহমেদের নেতৃত্বে বিএনপি পন্থী ২০ থেকে ২৫ জন নেতাকর্মী তার কার্যালয়ে প্রবেশ করে। পৌরসভার মেয়র নজরুল ইসলাম মন্ডলের বাসার সামনে পুরাতন ফেস্টুন কেন সরানো হয়েছে জানতে চান। প্রতি উত্তোরে এক ঘন্টার মধ্যে পুনরায় ওই স্থানে ফেস্টুন বসানোর কথা বললে উত্তেজিত সুরে কথা বলে রুম থেকে বের হওয়ার সময় দরজায় ধাক্কা মারে। কেন ধাক্কা মারলো জানতে চাইলেই উত্তেজিত হয়ে টেবিলের গ্লাস, চেয়ার ভাঙচুর করেন। টেবিলে থাকা কলমদানি ছুড়ে প্রধানমন্ত্রীর ছবি ভাঙচুর করেন। সুমন নামের এক কর্মী বাধা দিলে তাকে মারধর করে ও টেবিলের ড্রয়ারে থাকা নগদ ৭০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। আবির হোসেন আরো বলেন, রাতুল আহমেদ এর বাবা কুব্বাত আলী মন্ডল পৌরসভার ২নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির নেতা। বিএনপি নেতার ছেলে পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি হয়ে বিভিন্ন অন্যায় কার্যকলাপ করছে। আপাতত কর্মসূচি স্থগিত হলেও তিনি এ ঘটনার সুষ্ঠ বিচার এবং শাস্তির দাবী করেন। অভিযোগ প্রসঙ্গে গোয়ালন্দ পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি রাতুল আহমেদ বলেন, মেয়রের বাসার সামনে টানানো ফেস্টুন আমাকে না জানিয়ে সরিয়ে আবির হোসেন রিদয়ের ফেস্টুন স্থাপন করে। কেন সেটি সরানো হয়েছে তা জানতে তার কার্যালয়ে যাই। এ নিয়ে প্রশ্ন করলে পুনরায় স্থাপনের কথা বললে আমরা ফিরে আসি। এরপরই শুনতে পাই তার কার্যালয় ভাঙচুর করা হয়েছে এবং সেটার জন্য আমাদের দায়ী করা হয়েছে। যদি কোন বিষয় আলোচনা সাপেক্ষে সমাধান হয় সেখানে ভাঙচুর কেন হবে? আর প্রধানমন্ত্রীর ছবি ও টেবিল ভাঙচুরের কথা বলা হয়েছে যা আমরা জানিইনা। এ প্রসঙ্গে গোয়ালন্দ ঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) স্বপন কুমার মজুমদার বলেন, ব্যক্তিগত কার্যালয় হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় ঈদের পরদিন রাতে উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আবির হোসেন রিদয় বাদী হয়ে মামলা করেছেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করা হয়নি। এ বিষয়ে গোয়ালন্দ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব ঘোষ বলেন, ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের কার্যালয়ে যে ঘটনাটি ঘটেছে তা দুঃখজনক। পরবর্তীতে উপজেলা ছাত্রলীগ ও পৌর ছাত্রলীগের পৃথক কর্মসূচি আহবান করায় আমরা অনাকাঙ্খিত ঘটনা এড়াতে মঙ্গলবার রাতে দলীয় কার্যালয়ে উপজেলা এবং পৌর আ.লীগের নেতৃবৃন্দকে নিয়ে জরুরি বৈঠকে বসি। বৈঠকে উভয় পক্ষের কর্মসূচি স্থগিত ও উপজেলা আ.লীগের সহসভাপতি মো. মামুন-অর রশিদকে আব্বায়ক করে ৯ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটি তিন দিনের মধ্যে রিপোর্ট পেশ করবেন। এতে যে দোষি সাব্যস্ত হবেন তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এমনকি সমস্যা সমাধান না হওয়া পর্যন্ত গোয়ালন্দে ছাত্রলীগের সকল ধরনের কর্মকান্ড স্থগিত করা হয়েছে।