আজ বৃহস্পতিবার (৬ আগস্ট) ঢাকায় বাংলাদেশ সচিবালয়ে তথ্য অধিদফতরের সম্মেলন কক্ষে বঙ্গমাতা ফজিলাতুন নেছা মুজিব এর ৯০ তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে অনুষ্ঠানের বিস্তারিত গণমাধ্যমের সামনে তুলে ধরতে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা সংবাদ সম্মেলনে বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ৮ আগস্ট সকাল ১০.৩০ টায় গণভবন থেকে ভার্চুয়াল প্লাটফর্মে বঙ্গমাতা ফজিলাতুন নেছা মুজিব এর ৯০ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগদান করবেন। বৈশ্বিক মহামারি করোনার কারণে ক্ষতিগ্রস্থ নারীদের আর্থিক সাহায্য ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে বঙ্গমাতার ৯০তম জন্মবার্ষিকীতে দুঃস্থ নারীদের সেলাই মেশিন ও মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে নগদ অর্থ প্রদান করা হবে। গোপালগঞ্জ জেলার দরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থীদের মধ্যে একশত ল্যাপটপ বিতরণ করা হবে। সকল জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে প্রাপ্ত সুবিধাভোগীদের তালিকা অনুযায়ী ৬৪ জেলায় তিন হাজার দুইশত সেলাই মেশিন ও তেরশ জন দুঃস্থ ও অসহায় নারীদের মধ্যে দুই হাজার টাকা করে মোট ছাব্বিশ লাখ টাকা প্রদান করা হবে।
প্রতিমন্ত্রী এসময় সাংবাদিকদের জানান, গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে আর্থিক অনুদান গ্রহণের জন্য ০৫ জন, সেলাই মেশিন গ্রহণের জন্য ০৫ জন এবং ল্যাপটপ গ্রহণের জন্য ০৫ জন নির্বাচিত সুবিধাভোগী উপস্থিত থাকবেন। আর্থিক অনুদানের অর্থ ইলেক্ট্রনিক পদ্ধতিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচিত সুবিধাভোগীদের মোবাইল নম্বরে স্থানান্তর করা হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক উপস্থিত সুবিধাভোগীদের মধ্যে সেলাই মেশিন এবং ল্যাপটপ হস্তান্তর করবেন।
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত সচিব ফরিদা পারভীন, অতিরিক্ত সচিব ড. মহিউদ্দীন আহমেদ, প্রধান তথ্য কর্মকর্তা সুরথ কুমার সরকার ও মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। বাংলাদেশ সচিবালয়ে কর্মরত বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকবৃন্দ সংবাদ সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন।
প্রতিমন্ত্রী ইন্দিরা জানান, রাজনীতির কবি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পাশে বঙ্গমাতা ছিলেন রাজনীতির দার্শনিক হয়ে। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় যথাযথ মর্যাদায় মহীয়সী নারী বঙ্গমাতা ফজিলাতুন নেছা মুজিব এর জন্মবার্ষিকী উদযাপন করে আসছে। এ বছরের প্রতিপাদ্য “বঙ্গমাতা ত্যাগ ও সুন্দরের সাহসী প্রতীক”। জন্মবার্ষিকী অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মতিয়া চৌধুরী। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষে প্রধান অতিথি হিসেবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র উপস্থিতিতে বঙ্গমাতার ৯০তম জন্মবার্ষিকী উদযাপনের পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু বৈশ্বিক মহামারি কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে ডিজিটাল পদ্ধতিতে ভার্চুয়াল প্লাটফর্মে বঙ্গমাতার ৯০ তম জন্মবার্ষিকী পালন ও বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। সকলের সম্মিলিত সহযোগিতায় মুজিববর্ষে যথাযথযোগ্য মর্যাদায় বঙ্গমাতার জন্মবার্ষিকীর সকল কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হবে। সারা দেশে জেলা প্রশাসকদের সাথে সমন্বয় করে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীন দপ্তর-সংস্থা বঙ্গমাতার জন্মবার্ষিকী উদযাপনে আলোচনা সভার আয়োজন করবে। যার মাধ্যমে মহান মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রতিটি পর্যায়, যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পূনর্গঠন এবং দেশে নারীর ক্ষমতায়নে বঙ্গমাতা ফজিলাতুন নেছা মুজিব এর গৌরবময় ও অগ্রণী ভুমিকা সর্বস্তরের মানুষের মাঝে ছড়িয়ে যাবে। বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশের দুতাবাস ও মিশনসমূহ জন্মবার্ষিকীর অনুষ্ঠান উদযাপন করবে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী ইন্দিরা বলেন, কোভিড-১৯ এর কঠিন পরিস্থিতিতে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় দুঃস্থ- অসহায় নারীদের ভিজিডি, মাতৃত্বকালীন ভাতা ও কর্মজীবী ল্যাক্টেটিং মা ভাতা প্রদানের মাধ্যমে বিশ লাখের বেশি নারী ও শিশুর খাদ্য ও পুষ্টি নিশ্চিত করছে। অসহায়-দুস্থ নারী ও শিশুদের আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। এ সময় তিনি বলেন, গণমাধ্যমকর্মীরা ৮ আগস্ট বঙ্গমাতার ৯০ তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন অনুষ্ঠান প্রচারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
(প্রেস রিলিজ)
সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, অনুষ্ঠানটি বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতার ও অনালাইনে সরাসরি সম্প্রচার করা হবে। ডিজিটাল পদ্ধতিতে উদযাপিত অনুষ্ঠান যেন বেশী সংখ্যক মানুষ উপভোগ করতে পারে সেলক্ষ্যে মোবাইলে এসএমএস প্রদান করা হচ্ছে। মহীয়সী নারী বঙ্গমাতার গৌরবময় কর্মজীবনের উপর প্রামাণ্যচিত্র নির্মান ও স্মরণিকা প্রকাশ করা হবে। বাংলাদেশ শিশু একাডেমি মিলনায়তন থেকে বঙ্গমাতা ফজিলাতুন নেছা মুজিব এর ৯০ তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে অনুষ্ঠানে সভাপতি হিসেবে মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা ও অন্যান্য বিশেষ অতিথিবৃন্দ ভার্চুয়াল প্লাটফর্মে সংযুক্ত থাকবেন। এছাড়া গোপালগঞ্জ থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সংযুক্ত হবেন গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা।