শিরোনাম
গোয়ালন্দে হেরোইনসহ মাদক কারবারি আটক গোয়ালন্দে ইয়াবাসহ মাদক কারবারি গ্রেপ্তার গোয়ালন্দে ইয়াবাসহ মাদক কারবারি গ্রেপ্তার গোয়ালন্দে সঞ্চারণ সিরাত প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে আইন-শৃঙ্খলা বিষয়ক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত কৃষককে অফিস থেকে বের করে দেওয়া সেই দুই কর্মকর্তাকে বদলি কখনো ম্যাজিস্ট্রেট, কখনো মেজর পরিচয়ে প্রতারণা করতেন মুক্তা পারভিন প্রেম করে বিয়ে, স্বামীর হাতেই মৃত্যু  ঈদ উপলক্ষে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ১৫ টি ফেরি ও ২২ টি লঞ্চ চলাচল করবে শাশুড়ীকে হত্যার দায়ে পুত্রবধূ ও পরকীয়া প্রেমিকের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড

এক জেলায় ২৪০ ক্লিনিকের ২৩৩টি অবৈধ

নিউজ ডেস্ক | রাজবাড়ী টেলিগ্রাফ / ১৮৮ বার পড়া হয়েছে
সর্বশেষ আপডেট : মঙ্গলবার, ৩১ মে, ২০২২

0Shares

সাতক্ষীরার সাত উপজেলায় ২৪০টি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে। অথচ চলতি বছর পর্যন্ত নিবন্ধন নবায়ন হয়েছে মাত্র সাতটির। এর মধ্যে দুটি ক্লিনিক ও পাঁচটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার। তবে অনলাইনে আবেদন করে নিবন্ধনের অপেক্ষায় আছে ১১৭টি এবং আবেদন করেনি অথবা করলেও ভিজিটের নির্দেশনা আসেনি ১১৬টি চিকিৎসা সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের। বলতে গেলে এসব ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বছরের পর বছর ধরে অবৈধভাবে পরিচালিত হচ্ছে।

এরই মধ্যে শনিবার অনিবন্ধিত এসব প্রতিষ্ঠান বন্ধের নির্দেশনা দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। নির্দেশনা অনুযায়ী গত দুই দিনে ৪৫টি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ করে দিয়েছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।

রবিবার (২৯ মে) গভীর রাত পর্যন্ত শতাধিক ক্লিনিকে অভিযান চালিয়ে ৪৫টি বন্ধ করে দেওয়া হয়। এ সময় নিবন্ধন না থাকাসহ বিভিন্ন অপরাধে কয়েকটিকে ৭৪ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। ৪৫টির মধ্যে শুধু সাতক্ষীরা শহরেই বন্ধ হয়েছে ১০টি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার।

এছাড়া শ্যামনগর উপজেলায় ২৫টি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অভিযান চালিয়ে সাতটি ক্লিনিক ও তিনটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ করা হয়েছে। দেবহাটায় সাতটি ক্লিনিক ও তিনটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সবগুলোই বন্ধ করা হয়েছে।

কালিগঞ্জে ১৫টি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অভিযান চালিয়ে দুটিতে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। তিনটি ক্লিনিকের মালিক পক্ষ পালিয়ে যায়। ছয়টি ক্লিনিক ও ৯টি ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ করা হয়েছে। এছাড়া কলারোয়া উপজেলায় চারটি ক্লিনিক বন্ধ করা হয়েছে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সজিব তালুকদার ও ডা. জয়ন্ত সরকার এই অভিযান পরিচালনা করেন।

সোমবার সকালে কলারোয়া ও তালা উপজেলায় অভিযান পরিচালনা করা হয়।

স্থানীয় সূত্র জানায়, জেলা শহরে হাতেগোনা কয়েকটি চিকিৎসা সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান ছাড়া বাকিগুলো অনুপযোগী। নেই চিকিৎসক ও সেবিকা, ছোট ছোট দোকান ঘরের মতো ঝুপড়ি ঘরেই প্রয়োজনীয় মেশিনপত্র ছাড়াই চলছে এসব নামমাত্র ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার।

স্থানীয়দের দীর্ঘদিনের অভিযোগ, এসব ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চিকিৎসার নামে অপচিকিৎসা বেশি হয়। নেওয়া হয় অতিরিক্ত টাকা। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, স্যাঁতস্যাঁতে মেঝে, গলির মতো ছোট পথ, নেই আলো-বাতাসের ন্যূনতম সুযোগ।

বাড়িতে গ্রাম্য দালাল আর শহরের ভ্রাম্যমাণ দালালদের খপ্পরে পড়ে প্রান্তিক পর্যায়ের নিরীহ মানুষ এসব ক্লিনিকে চিকিৎসা নিতে এসে অসুস্থ কিংবা পঙ্গু অথবা লাশ হয়ে বাড়িতে ফিরছেন। ফলে এসব অবৈধ স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত যৌক্তিক বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।

কয়েকজন চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সাতক্ষীরার অধিকাংশ ক্লিনিকে দীর্ঘদিন ধরে অনুপযোগী এবং অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে চিকিৎসা ব্যবস্থা চলছে। অবৈধ এসব প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসার দেওয়ার নামে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন মালিকরা। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।

কয়েকটি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক জানিয়েছেন, ২০১৮ সালে ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের অনলাইন নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু হয়। সে সময়ে অনলাইনে আবেদন করলেও অনেক ক্লিনিক ভিজিট করতে আসেননি স্বাস্থ্য অধিদফতরের কর্মকর্তারা। ফলে নিবন্ধন পাননি তারা।

তবে স্বাস্থ্য অধিদফতরের কর্মকর্তারা বলছেন, চিকিৎসক সংকটের পাশাপাশি অধিকাংশ ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নার্স এবং যন্ত্রপাতি নেই। এগুলো নামমাত্র ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার।

সাতক্ষীরা ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, তড়িঘড়ি নয় বরং নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দিয়ে ভিজিটপূর্বক অবৈধ প্রতিষ্ঠান চিহ্নিত করে বন্ধ করা উচিত। তা না হলে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন এই পেশার সঙ্গে জড়িত সংশ্লিষ্টরা।

স্থানীয় মানবাধিকারকর্মী মাধব চন্দ্র দত্ত বলেন, সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী জেলায় অবৈধ ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে চলা অভিযানকে সাধুবাদ জানাই। দ্রুত সময়ের মধ্যে এসব অবৈধ ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধের পাশাপাশি সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাই।

জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. হুসাইন শাফায়াত বলেন, অবৈধ ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে। এরই মধ্যে গত দুই দিনের অভিযানে ৪৫টি ক্লিনিক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বাকিগুলোও বন্ধ করে দেওয়া হবে।

তিনি বলেন, জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের হিসাবে ২৪০টি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে। তবে ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের কর্মকর্তারা বলেছেন, তিন শতাধিক ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে। এর মধ্যে সিবি হসপিটাল, কেয়ার ক্লিনিক এবং ডিজিটাল ল্যাবের তিনটি প্রতিষ্ঠান, কেয়ার ল্যাব ও শ্যামনগরের ডক্টরস ডোর এই সাতটি প্রতিষ্ঠানের চলতি বছর পর্যন্ত নিবন্ধন রয়েছে। বাকিগুলো অনিবন্ধিত। তারা অবৈধভাবে কার্যক্রম চালাচ্ছে। আমরা অভিযান চালিয়ে বন্ধ করে দেবো।
সূত্রঃ বাংলা ট্রিবিউন

Facebook Comments


এ জাতীয় আরো খবর
NayaTest.jpg