স্টাফ রিপোর্টার,
রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলায় সংরক্ষিত মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ও তার স্বামী সাবেক ভাইস চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মাছের ঘের ও ঘর ভাঙচুর প্রতিবাদে গোয়ালন্দ প্রেসক্লাবে সংবাদ সন্মেলন করেছেন দৈনিক খোলা কাগজ পত্রিকার গোয়ালন্দ উপজেলা প্রতিনিধি মো. সিরাজুল ইসলাম। উক্ত সন্মেলনে উপস্থিত ছিলেন গোয়ালন্দ প্রেসক্লাবের সভাপতি রাশেদ রায়হান, সাধারণ সম্পাদক শফিক শামীম সহ বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক পত্রিকার প্রতিনিধিগন।
সাংবাদিক সম্মেলনে মো. সিরাজুল ইসলাম লিখিত অভিযোগে জানান, গোয়ালন্দ উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান কাইয়ুম মোল্লার সন্তান পিয়াস মাহমুদের নামে একটা সংবাদ প্রকাশিত হয়। গত ১০/০৫/২০২২ ইং তারিখে জাতীয় পত্রিকা সহ স্থানীয় বিভিন্ন অনলাইনে গোয়ালন্দ ভাইস চেয়ার ম্যানের সন্তান ভূমিহীন কৃষক কে দেখিয়ে অসহায় ভূমিহীন কৃষকদের জমি দখল শিরোনামে একটি নিউজ প্রকাশিত হয়। এর জের ধরে দক্ষিণ দৌলতদিয়া তোরাপ শেখের পাড়ায় অবস্থিত, ডেইলি অবজারভার ও দৈনিক খোলা কাগজ পত্রিকার প্রতিনিধির মাছের ঘের ও ঘর ভাঙচুর করে দুর্বত্তরা।
তিনি আরো জানান, তাদের জমির পাশেই উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান কাইয়ুম মোল্লার স্ত্রী বর্তমান মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানের ভাইয়ের নামে আরেকটি জমি লীজ নেওয়া হয়েছে। যদিও তার ভাই সফিকুল ইসলাম ও তার স্ত্রী বৃষ্টি বেগম পাবনায় বসবাস করেন এবং স্বচ্ছল। কিন্ত কৌশলে করে দক্ষিণ দৌলতদিয়ার বাসিন্দা হিসাবে দেখিয়ে জমি লীজ নেন। এবং তারা পৌর ছয় নম্বর ওয়ার্ডে আড়ৎ পট্রি এলাকায় বসবাস করলেও সন্তানকে দক্ষিন দৌলতদিয়ার বাসিন্দা দেখান। তার ভাইয়ের মাধ্যমে জালিয়াতি করে জমি লীজ এই সংবাদ সংগ্রহ করে নিউজ করা হবে এটা শুনে ক্ষিপ্ত হয়ে তিনি বিভিন্ন সময় হুমকি ধামকি দেয়। এতে কোন কাজ না হওয়ায় দক্ষিণ দৌলতদিয়ার তোরাপ শেখের পাড়ায় অবস্থিত মাছের ঘের এর বেড়া এবং সেখানে নির্মিত বসার ঘর রাতের আধারে সন্ত্রাসী বাহিনী লেলিয়ে দিয়ে গুড়িয়ে দেয়।
ঘটনার বিবরনে আরোও জানা যায়, কাইয়ুম মোল্লা ভাইস চেয়ারম্যান থাকা অবস্থায় তার সন্তান পিয়াস মাহমুদ কে ভূমিহীন কৃষক দেখিয়ে গত ৩১/০৮/২০১০ তারিখে গোয়ালন্দ উপজেলার দক্ষিণ দৌলতদিয়ার ৪৭ নম্বর মৌজার বিএস ১ ক্ষতিয়ানের ৫৭ শতাংশ জমি লীজ নেন। যেখানে লিয়াকত আলী ও আলী নামে দুজন লোক তাদের পরিবার নিয়ে গত ৫৫ বছর ধরে বসবাস করছেন। তাদের তিনি বিভিন্ন সময় হুমকি ধামকি দেয় সেখান থেকে চলে যাওয়ার জন্য।
এবং একই মৌজার ১/১৪ঃনম্বর দাগে আরও ৬৮ শতাংশ জমি লীজ নিয়েছেন তার স্ত্রী নার্গিস পারভীন (বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান) এর ভাইয়ের নামে। যে পাবনায় বসবাস করে কিন্তু তাকে দৌলতদিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা দেখিয়ে সফিকুল ইসলাম এবং বৃষ্টি বেগম নামে এই জমি লীজ নিয়ে ভোগ করে আসছে যেখানে ইতিমধ্যে কয়েকটি পরিবার ৫৫/৬০ বছর ধরে বসবাস করে আসছে।
এ বিষয়ে গোয়ালন্দ ঘাট থানায় প্রথমে একটি জিডি ও পরবর্তীতে একটা অভিযোগ করা হলেও এখনও কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। মামলার দায়িত্বে থাকা এস আই শামিম বলেন, এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে এবং সেটা এখন তদন্তে রয়েছে।
এ ব্যাপারে গোয়ালন্দ উপজেলা সংরক্ষিত মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নার্গিস পারভীন কোন বক্তব্য দিতে অস্বীকার করেন এবং বলেন আমার যা বলার কয়েকদিন পর সবাইকে ডেকে বলবো।
গোয়ালন্দ উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি জনাব রফিকুল ইসলাম এ ব্যাপারে গত কয়েকদিন আগে তিনি বলেন, যে ব্যাপারটি তিনি জানেন। এবং এটি সম্পূর্ণ অবৈধ একটি প্রক্রিয়া। একটা মাষ্টার্স পাশ ছেলে যে ভালো চাকরি করছে সে ভূমিহীন কৃষক হয় কি করে। আমি ব্যাপারটি জানার পর থেকেই এটি বাতিল করার জন্য কাজ করছি। আশা করি শীঘ্রই এটি বাতিল করে অসহায় মানুষ যারা এটা ভোগ করছিল তাদের কাছে ফেরত দেওয়ার ব্যাবস্থা করছি।