গোয়ালন্দে সৈয়দ হোসেন ইউরোপিয়ান স্কুলের নিকট ৬ লক্ষ টাকা পাওনা টাকা ফেরত পেতে আইনি নোটিশ দিয়েছেন ঐ স্কুলের দুজন মালিকানা অংশীদার মোঃ আজমত আলী বেপারী ও গাজী সাইফুল ইসলাম। আইনজীবী মাধ্যমে এ নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
নোটিশে বলা হয়েছে
আমি এডভোকেট রিজভী হাসান পরশ আমার সম্মানীত মোয়াক্কেলগন ১। আজমত আলী বেপারী , পিতা- হোসেন আলী বেপারী , ২। গাজী সাইফুল ইসলাম , পিতা- মৃত জাবেন আলী গাজী সেক কর্তৃক যথাযথ ভাবে ক্ষমতা প্রাপ্ত হইয়া অত্র লিগ্যাল নোটিশ দ্বারা আপনারা লিগ্যাল নোটিশ গ্রহীতাগন ১। মোঃ মজিবুর রহমান , পিতা- হাবিবুর রহমান , সভাপতি , সৈয়দ হোসেন ইউরোপিয়ান স্কুল , পৌর ৩ নং ওয়ার্ড , কুমড়াকান্দি , গোয়ালন্দ , জেলা রাজবাড়ী এবং ২ । আফরোজা বেগম , স্বামী- আবদুল কাদের সেক , প্রধান শিক্ষক , সৈয়দ হোসেন ইউরোপিয়ান স্কুল , পৌর ৩ নং ওয়ার্ড , কুমড়াকান্দি , গোয়ালন্দ , জেলা- রাজবাড়ী কে জানাইতেছি যে , ১। আপনি ১ নং লিগ্যাল নোটিশ গ্রহীতা এবং ২ নং লিগ্যাল নোটিশ গ্রহিতার স্বামী ও আমার মোয়াক্কেল সহ ২২ জন মিলে ২০১৮ সনের জুলাই মাসে সৈয়দ হোসেন ইউরোপিয়ান স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন , প্রতিষ্ঠাকালিন ২ নং নোটিশ দাতা উক্ত স্কুলের প্রধান শিক্ষক ছিলেন এবং আপনি ১ নং নোটিশ গ্রহীতা সভাপতি ছিলেন এবং অদ্য পর্যন্ত আপনি সভাপতি হিসাবে বহাল আছেন বটে । ২। আপনি ১ নং লিগ্যাল নোটিশ গ্রহীতা ও ২ নং লিগ্যাল নোটিশ গ্রহীতার স্বামী ও আমার মোয়াক্কেল সহ স্কুল প্রতিষ্ঠার সময় সিদ্ধান্ত হয় যে কোন অংশীদার যদি তাহার মালিকানা ছেড়ে যেতে চায় তাহলে তাহার পাওনা হিসাব করে মালিকানা ছেড়ে যাবার ৬ ( ছয় ) মাসের মধ্যে পরিশোধ করে দিতে হবে । ৩। আপনি ১ নং লিগ্যাল নোটিশ গ্রহিতা ও ২ নং লিগ্যাল নোটিশ গ্রহীতার স্বামী আমার মোয়াজোম্বয়ের হতে উক্ত সৈয়দ হোসেন ইউরোপিয়ান স্কুল প্রতিষ্ঠার সময়ে ৮,০০,০০০ / – ( আট লক্ষ ) টাকা গ্রহন করিয়াছিলেন । ৪। আমার উপরোক্ত মোয়াক্কেলদ্বয় বিগত ২০১৯ সনের মে মাসে তাহাদের মালিকানার অংশ ছেড়ে যাওয়ার প্রস্তাব দেয় এবং ২১-০৫-২০১৯ইং তারিখে ২ নং নোটিশ দাতা তাহার দায়িত্বভার ছেড়ে দেন এবং সমস্ত মালামাল এবং বিগত ০৫-০৮-২০১৮ ইং হইতে ৩০-০৪-২০১৯ ইং তারিখের আয় ব্যায়ের হিসাব আপনি ১ নং নোটিশ গ্রহীতা বরাবরে বুঝাইয়া দেন । বেদন এবং সমমান মামল ৫। আমার উপরোক্ত মোয়াক্কেলদ্বয় তাহাদের মালিকানা ছেড়ে চলে যাওয়ার পর আপনারা নোটিশ গ্রহীতাদ্বয় আপনাদের স্বপদে দায়িত্ব নিয়োজিত থেকে আমার মোয়াক্কেলম্বয় কে ২,০০,000 / ( দুই লক্ষ ) টাকা পরিশোধ করিলেও অন্য পর্যন্ত বাকি ৬,০০,০০০- / ( ছয় লক্ষ ) টাকা পরিশোধ করেন নাই । অথচ শর্ত ছিলো কেউ তার মালিকানার অংশ ছেড়ে গেলে ৬ ( ছয় ) মাসের মধ্যে তাহার পাওনা পরিশোধ করে দিতে হবে । ৬। আপনি ১ নং নোটিশ গ্রহীতা সৈয়দ হোসেন ইউরোপিয়ান স্কুলের প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি এবং ২ নং নোটিশ গ্রহীতা প্রধান শিক্ষক হিসাবে আমার মোয়াক্কেলদ্বয়ের পাওনা পরিশোধের দায়িত্বে নিয়োজিত রয়েছেন কিন্তু আপনারা নোটিশ গ্রহীতাদ্বয় আমার মোয়াক্কেলদ্বয় কে তাহাদের পাওনা মোট ৬,০০,০০০- / ( ছয় লক্ষ ) টাকা পরিশোধ না করে বার বার সময় নিয়েও পাওনা পরিশোধ না করে কালক্ষেপণ করে ও ছলচাতুরী করে প্রতারনার আশ্রয় নিয়েছেন।
সরলতার সুযোগ নিয়া তাহাদের সহিত অপরাধ মূলক বিশ্বাস ভঙ্গ করেছেন বটে । একই সাথে আমার মোয়াক্কেল মারফত আমি আরো জানিতে পেরেছি যে উক্ত বিষয় নিয়া আপনারা নোটিশ গ্রহিতাদ্বয় অতি সম্প্রতি তাহাদের হুমকি ধমকি প্রদান করিয়া আসিতেছেন । যাহাতে সম্পূর্ণ ভাবে আপনারা নোটিশ গ্রহিতাগন দ্বয়ের Melafide Intention সামগ্রীক ভাবে প্রকাশিত হয় । AJA এমতাবস্থায় অত্র লিগ্যাল নোটিশ দ্বারা এই মর্মে অবগত করা যাচ্ছে যে , অত্র লিগ্যাল নোটিশ প্রাপ্তির ১৫ ( পনের ) দিনের মধ্যে আমার মোয়াক্কেলদ্বয়ের পাওনা উক্ত মোট ৬,০০,০০০- / ( ছয় লক্ষ ) টাকা নগদে পরিশোধ করিবেন । অন্যাথায় আমার মোয়জেল এর স্বার্থ রক্ষার্থে আপনার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের প্রচলিত দেওয়ানী ও ফৌজদারী আইন অনুযায়ী মামলা – মোকাদ্দমা দায়ের করা হইবে । বিঃ স্নঃ ভবিষ্যৎ আইনগত কার্যক্রম গ্রহন করিবার লক্ষে অত্র লিগ্যাল নোটিশের এক কপি আমার সেরেস্তায় সংরক্ষিত রইল।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্কুলের সভাপতি মজিবুর রহমানকে ফোন দেয়া হলে তিনি ব্যস্ততার অজুহাত দেখিয়ে বক্তব্য দেয়নি।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে জুন মাসে ২২ জন পার্টনার মিলে স্কুলটি করেন। টাকা ২২ জন পার্টনার দিলেও স্কুলের নামকরণ করা হয় পর্তুগাল প্রবাসী মনিরুল আলমের বাবার নামে। ঐসময় পার্টনারের মধ্যে চুক্তি ছিল যদি কোন পার্টনার স্কুল মালিকানা অংশীদারিত্ব ছেড়ে যেতে চায় তাহলে ৬ মাস আগে জানাতে হবে। সেই শর্ত মোতাবেক বেশ কয়েকজন পার্টনার স্কুলের নানা অব্যবস্থাপনা, সমস্যা কারণে মালিকানা অংশীদারিত্ব ছেড়ে দিয়ে বিনিয়োগকৃত অর্থ ফেরত চান। কিন্তু স্কুল কতৃপক্ষ নানা টালবাহানা করতে থাকে। এক পর্যায়ে সামাজিক, ভার্চয়াল মিটিং একাধিক বার মিটিং করে অর্থ ফেরত দেওয়ার কথা থাকলেও তারা তা ফেরত দিচ্ছে না। অন্যদিকে স্কুলে যেসব পার্টনার থাকতে চান তাদের স্ব স্ব নামে স্কুলের ৩৩ শতাংশ জমি রেজিস্ট্র করে দেয়া কথা বিনিয়োগকৃত টাকার অনুপাত হারে। সেটাও করছে না।
সাবেক সিঙ্গাপুর প্রবাসী নজরুল ইসলামকে তার পাওনা টাকা ফেরত চাইলে তাকে অন্তত শতাধিক বার তারিখ দেয়া হয়। তাকে টাকা দেয়া হয়নি, এরকম সৌদি প্রবাসী শাহিন, রুবেল, রিয়াজ, সালমান রয়েছেন। এছাড়া সিঙ্গাপুর প্রবাসী জাহাঙ্গীর মোল্লা, পর্তুগাল প্রবাসী কামাল রয়েছেন। তারা ক্ষোভে, দুঃখে স্কুলের মেসেঞ্জার গ্রুপে নানা মন্তব্য করেছেন। তারপরেও স্কুলের কতৃপক্ষ কোন কর্ণপাত করেনি।
স্কুলের আরেকজন পার্টনার মেজর ফারুকজা্মান টাকার জন্য একাধিক বার স্কুল কতৃপক্ষের কাছে পাওনা টাকা চাইলেও তা দিচ্ছে না।
স্কুলের আরেকজন পার্টনার আজমত আলী বেপারী বলেন, ৩ বছর হলো আমাদের টাকা দিচ্ছে না। স্কুলে একবার তালা মেরে বন্ধ করতে গেলে কিছু টাকা দিয়েছে। বাকী টাকা দিচ্ছে না।
স্কুল শুরুর দিকে প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক ছিলেন গাজী সাইফুল ইসলাম। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাকে ষড়যন্ত্র করে তারা আমাকে স্কুল থেকে সরিয়ে দিয়েছে, সেই জায়গায় রাবেয়া ইদ্রিস কলেজের অধ্যক্ষ কাদের সেকের স্ত্রী আফোরাজা খাতুনকে প্রধান শিক্ষক পদে বসিয়েছেন। এখন আমার পাওনা টাকা তারাও দিচ্ছে না,নিরুপায় হয়ে আমি আইনের আশ্রয় নিয়েছি “