স্টাফ রিপোর্টারঃ
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ৫নম্বর ফেরি ঘাটের রো রো ফেরি কেরামত আলী থেকে পরে মোজাফফর হোসেন নান্নু (৭০) নামের এক যাত্রী নিখোঁজ হয়েছে।
নিখোঁজ ব্যাক্তি পেশায় অটোরিকশা চালক ছিলেন। তিনি কুষ্টিয়া জেলার সদর পৌরসভার চৌরহাস এলাকার ফুলতলা গ্রামের মৃত ইসলাম শেখের ছেলে।
মঙ্গলবার ঘটনার খবর পেয়ে নৌ-পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে উদ্ধার প্রচেষ্টা চালায়। এবং ফায়ার সার্ভিস ষ্টেশনকে খবর জানায়। উদ্ধার অভিযানে অংশ নেন আরিচা কার্যালয়ের ডুবুরি দল ও গোয়ালন্দ ফায়ার সার্ভিস ষ্টেশন।
নিখোঁজ মোজাফফর হোসেনে নান্নুর মেয়ের জামাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরিরত আশরাফুল ইসলাম মানিক জানান, আমার শ্বশুর আমার স্ত্রী, ৩ বছরের মেয়ে ও আমার চাচাতো এক শ্যালক-কে নিয়ে ঢাকা হেমায়েতপুর আমার বাসায় যাচ্ছিলেন । রাত ৯ টায় কুষ্টিয়া থেকে লালন পরিবহনে উঠে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা করে। রাত ১১ টার পরে ঘাটে এসে সিরিয়ালে আটকা পরে। সিরিয়ালে থেকে রাত ১.৪৫ মিনিটে দৌলতদিয়া পাঁচ নম্বর ফেরি ঘাটে রো রো ফেরি কেরামত আলীতে ওঠে। এসময় ফেরিতে বাসটি ওঠার পর আমার শ্বশুর বাস থেকে নেমে ফেরির পকেট গেটের সামনে দাড়িয়ে ছিল। তখন ফেরি ছাড়ার সময় পন্টুনের সাথে ধাক্কা লেগে সে ফেরি থেকে পরে যায়। সাথে সাথেই উপস্থিত প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন ফেরিতে থাকা রশি ছুরে দেন তার দিকে, কিন্তু তিনি ধরতে ব্যার্থ হন।
তিনি অভিযোগ করে আরো বলেন, ঘটনা ঘটার পর পরই জরুরি সেবার নাম্বার ৯৯৯ ফোন করে ফায়ার সার্ভিসকে জানানো হয়। দীর্ঘ সময় পার হলেও ফায়ার সার্ভিসের কোন
তৎপড়তা ছিল না। বরং তারা আমার স্ত্রীর কাছে নানা ভাবে বিব্রত কর প্রশ্ন করেছে।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক প্রত্যক্ষদর্শী সেনা কল্যান সংস্থার এক কর্মকর্তা জানান, মঙ্গলবার দিবাগত রাত আনুমানিক ১.৪৫ মিনিটের দিকে কেরামত আলী ফেরিতে লালন পরিবহনসহ আরো কিছু গাড়ি ওঠে। ফেরিতে গাড়ি উঠার পরে নিখোঁজ ব্যাক্তি বাস থেকে নেমে ফেরির পকেট গেটের সামনে আসে। এসময় হঠাৎই তিনি নদীতে পরে যায়। তখনই কয়েকজন মিলে দ্রুত ফেরি থেকে রশি ফেলি।কিন্তু তিনি ধরতে ব্যার্থ হন। এসময় তার মেয়ে গাড়িতে ঘুমাচ্ছিলো। পরে তিনি জানতে পেরে আহাজারি করতে থাকেন। ফেরিটি পাটুরিয়ার দিকে চলে যায় এবং সেখান থেকে তারা আবার দৌলতদিয়া ঘাটে চলে আসে তার বাবাকে খুজতে।
এপ্রসঙ্গে দৌলতদিয়া নৌ-পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ সৈয়দ জাকির হোসেন জানান, খবর শোনার পরপরই আমরা ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকারী স্প্রীড বোর্ড নিয়ে তল্লাশি করেছি। কিন্তু এখনো পায়নি। সকাল ৯ টার একটু আগে এসে ফায়ার সার্ভিস উদ্ধার কাজ শুরু করেন।
উদ্ধার অভিযানে অংশ নেয়া গোয়ালন্দ ফায়ার সার্ভিস ষ্টেশনের লিডার সাবেকুল ইসলাম জানান, রাতে ঘন কুয়াশার কারনে উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করা সম্ভব হয়নি। বৃহস্পতিবার সকাল ৮.৩০ থেকে উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করা হয়। দুপুর পর্যন্ত উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করে নিখোঁজ ব্যাক্তিকে না পেয়ে আজকের মত উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়।
আরিচা কার্যালয়ের ডুবুরি দলের নেতৃত্ব দেয়া লিডার মো. গিয়াস উদ্দিন জানান, খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার সকাল ৮ টায় ঘটনাস্থলে পৌছাই। ৮.৩০ মিনিট থেকে আমাদের ডুবুরি দল অভিযান শুরু করে। ৫ নম্বর ঘাট থেকে শুরু করে ৬ নম্বর ঘাট পর্যন্ত খোজাখুজি করা হয়। তবে নিখোঁজ ব্যাক্তিকে পাওয়া যায়নি। আমাদের উদ্ধার অভিযান দুপুর পর্যন্ত পরিচালনা করে সাময়িক সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়।