স্টাফ রিপোর্টারঃ
পটুয়াখালী সদরের দক্ষিন সবুজবাগ এলাকার শোয়েবুর রহমান শোয়েব। তিনি পটুয়াখালী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে ডিপ্লোমা শেষ করে ঢাকার এক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ করেন। এরপর ভালো বেতনে চাকরিও করতেন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে।
একবছর আগে পিতাহারা হন শোয়েব। পিতার অবর্তমানে সংসারের হাল ধরতে ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে কিনেছিলেন যশোর-ট-১১-২৯৫২ সিরিয়ালের একটি ট্রাক।
ট্রাকটিতে সেনাবাহিনীর ওয়াকশনকৃত মাল লোড করে পটুয়াখালী থেকে ঢাকা ধোলাই পাড় যাচ্ছিলেন চালক মো. ইয়াকুব হাওলাদার।
দৌলতদিয়া ফেরঘাট থেকে বুধবার সকাল ৯টায় পাটুরিয়ার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায় আমানত শাহ ফেরি। সেই ফেরিতে ১৭ টি পণ্যবাহী ট্রাকের মধ্যে শেয়েবের ট্রাকটিও ছিল। পাটুরিয়ার ৫নং ফেরিঘাটে সকাল পৌঁনে ১০ টার দিকে ১৪ টি যানবাহন সহ ডুবে যায় ফেরিটি।
খবর শুনে পটুয়াখালী থেকে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন শোয়েব। এসেই শোনেন তার গাড়িটি নদিতে। একথা শুনেই কেঁদে ফেলেন তিনি। দিকবেদিক ছুটতে থাকেন শোয়েব গাড়িটি উদ্ধারের জন্য।
আবেগ আপ্লুত হয়ে শোয়েবুর রহমান শোয়েব আজকের পত্রিকা-কে বলেন, আমার সব কিছু শেষ ভাই। আমার সংসার চলতো এই গাড়িটি দিয়েই। মাত্র একবছর আগে ব্যাংক লোন নিয়ে গাড়িটি কিনেছি। মোটামুটি ভালই যাচ্ছিল সব কিছু। কিন্তু এখন আমার কি হবে।
তিনি ক্ষোভের সাথে আরো বলেন বুধবার থেকে উদ্ধার কারী দলের তৎপরতা তেমন সন্তোষজনক না। গতকাল থেকে মাত্র ৪টি গাড়ী উঠাতে সক্ষম হয়েছে। এছাড়াও সরকারের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্থ দের এখন পর্যন্ত কোন তালিকাও তৈরি করা হয়নি, হবে কিনা তাও জানেন না তিনি। ক্ষতিপূরণ পাবেন কিনা তাও জানেন না।
ট্রাকটির চালক মো. ইয়াকুব হাওলাদার জানান, বুধবার দৌলতদিয়া ৫নং ঘাট থেকে ১৭ টি পণ্যবাহী ট্রাক নিয়ে পাটুরিয়ার উদ্দেশ্যে রওানা দেয় ফেরিটি। মাঝ নদীতে আসা মাত্রই ফেরটি বাম দিকে ঝুকে যেতে থাকে। পাটুরিয়ার ৫ নং ঘাটে ভিড়তেই ৩টি গাড়ি নামতে সক্ষম হয়। আরেকটি ট্রাক অর্ধেক নামার সাথে সাথেই ফেরি কাথ হয়ে ডুবে যায়। সেই অর্ধেক নামা ট্রাকটির পেছনেই ছিল আমার ট্রাক। যখন দেখলাম কাথ হয়ে ডুবে যাচ্ছে তখনই ট্রাক থেকে নেমে কোন মতে জীবন বাচান ট্রাক চালক।
ট্রাক মালিকসহ চালক এখনও পর্যন্ত ঘটনাস্থলে থেকে গাড়ির সন্ধানে আছেন।